মুম্বই: ইতিহাস হতে চলেছে মুম্বইয়ের (Mumbai) আইকনিক কালী-পিলি ট্যাক্সি। ৬ দশক ধরে বাণিজ্যনগরীতে রীতিমতো দাপিয়ে বেড়িয়েছে কালো-হলুদ ট্যাক্সি। ৯০-এর দশকে বলিউডের বহু সিনেমাতেও জায়গা করে নিয়েছিল কালো-হলুদ ট্যাক্সি। যার ভাল নাম, কালী-পিলি পদ্মিনী ট্যাক্সি (Padmini Taxi)। মুম্বইয়ের সেই ঐতিহ্য এবার ইতিহাস হতে চলেছে। মুম্বইয়ের রাস্তা থেকে সম্পূর্ণভাবে উঠে যেতে চলেছে এই ট্যাক্সি।
পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, সাধারণত ক্যাব গাড়ির রাস্তায় চলার মেয়াদ থাকে ২০ বছর। মুম্বইয়ের প্রিমিয়ার পদ্মিনী ট্যাক্সি সর্বশেষ যেটি রেজিস্টার্ড হয়েছিল, সেটির মেয়াদ ফুরোচ্ছে ২৯ অক্টোবর, ২০২৩। ফলে সোমবার থেকে মুম্বইয়ের রাস্তায় আর এই ট্যাক্সি দেখা যাবে না।
মুম্বইয়ে সর্বশেষ পদ্মিনী ট্যাক্সি নিয়েছিলেন আব্দুল করিম কারসেকর। মুম্বইয়ের প্রভাদেবী এলাকারক বাসিন্দা আব্দুল করিমের ট্যাক্সির নম্বর হল, MH-01-JA-2556। আগামী কাল সেটির মেয়াদ সম্পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। তাই আবেগপ্রবণ করিম বলেন, “ইয়ে মুম্বই কি শান হ্য়ায় অর হামারি জান হ্যায়।” কিন্তু, সোমবার থেকে মুম্বইয়ের এই ‘শান’ আর দেখা যাবে না। এর প্রধান কারণ, এই মডেলটির উৎপাদন ২০০০ সাল থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আর যেগুলি রাস্তায় চলছিল, সেগুলির মেয়াদ সম্পূর্ণ। উৎপাদন বন্ধ হওয়ারও অবশ্য বিশেষ কারণ রয়েছে। এই ট্যাক্সি থেকে বায়ু দূষণ হয়। তাই সরকার এই ট্যাক্সি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বর্তমানে পদ্মিনী ট্যাক্সির জায়গা নিয়েছে বিভিন্ন অনলাইন ক্যাব। তবে এখনও মুম্বইয়ের প্রবীণ এক বাসিন্দাদের কাছে পদ্মিনী ট্যাক্সির যেন চাহিদা রয়ে গিয়েছে। এটা যেন একটা আলাদা আবেগ। ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, ১৯৬৪ সালের ফিয়াট ১১০০ -এর দেশীয় সংস্করণ ১১০০ ডিলাইট বাজারে নিয়ে এসেছিল। এটি রাস্তায় নামার এক বছর পর এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় প্রিমিয়ার প্রেসিডেন্ট। ১৯৭৪ সালে আবার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘প্রিমিয়ার পদ্মিনী’। তারপর রং হলুদ-কালো হওয়ার জন্য এটি কালী-পিলি পদ্মিনী নামে পরিচিত হয়। খুব অল্প দিনের মধ্যেই এটি নিজের পরিচিতি করে নেয়। মুম্বইয়ের সরু রাস্তাতেও এটি যেতে পারত। দীর্ঘ ৬ দশক ধরে চলার পর অবশেষে এটি অবলুপ্ত হতে চলেছে। তাই অনেকেই পদ্মিনী ট্যাক্সি মিউজিয়ামে সংগ্রহ করে রাখার দাবি জানিয়েছেন।