পানাজি : বিজেপি বিরোধী জোটের অস্তিত্ব আদৌ আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্নটা ক্রমেই বড় হচ্ছে। কারণ, আঞ্চলিক রাজনীতিতে তার বিন্দুমাত্রও প্রতিফলন চোখে পড়ছে না। দু’দিন আগেই গোয়ায় গিয়েছিলেন মমতা। একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছেন। এদিকে মমতা সফরের শেষ দিনেই আবার কংগ্রেসের দলীয় কর্মসূচিতে পৌঁছে গিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। আর এবার গোয়ায় সরকার গঠনের স্বপ্ন নিয়ে সৈকত শহরে অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
রাজনীতির সমীকরণ কখন যে কী রূপ নেয়, বলা মুশকিল। তবে এখনও পর্যন্ত যা ছবি, তাতে তৃণমূল, কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টি আলাদা আলাদাভাবেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে গোয়ার নির্বাচনে। প্রত্যেকেরই লক্ষ্য গোয়ার গদি। আজ যেমন অরবিন্দ কেজরিওয়াল গোয়ায় গিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিলেন, আসন্ন নির্বাচনে আম আদমি পার্টির সরকার গঠন হলে, তিনি অযোধ্যা, শিরডি, ভেলাংকান্নি এবং আজমেরের তীর্থযাত্রা বিনামূল্য করিয়ে দেবেন গোয়াবাসীকে।
যে অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মমতার পাশে দাঁড়িয়ে, তাঁকে সমর্থন করে মাঝে মধ্যেই টুইট করেন, তাঁর এ হেন গোয়া জয়ের ইচ্ছা তৃণমূল সুপ্রিমো যে মোটেই ভালভাবে দেখছেন না, তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসেও গোয়া সফরে গিয়েছিলেন কেজরিওয়াল। তখনও একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছিলেন।
প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, গোয়ার প্রত্যেক যুবকের কর্মসংস্থান করবেন। বেকার ভাতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়ে এসেছেন। ক্ষমতায় এলে যতক্ষণ পর্যন্ত না কোনও যুবক চাকরি পাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত পরিবারপিছু একজন যুবককে মাসে তিন হাজার টাকা বেকার ভাতা দেবে কেজরিওয়াল। আর যে পরিবারগুলি পর্যটন বন্ধ থাকার কারণে দুর্দশায় ভুগছে, তাদেরও পরিবারপিছু মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে।
২০২২ সালে গোয়াতে বিধানসভা নির্বাচন। গোয়ার বিধানসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের কথা আগেই ঘোষণা করেছিল আম আদমি পার্টি। আগের দুই গোয়া সফরের নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই গোয়ার ভোটারদের মন জয়ে ২৪ ঘণ্টা বিনামূল্যে বিদ্যুৎ এবং কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বিনামূল্যে বিদ্যুৎ দেওয়ার ঘোষণার সঙ্গে দিল্লিতে আপের উত্থানের কথা অনেককেই মনে করিয়ে দিয়েছে। প্রথমবার দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের সময় বিদ্যুৎ ও জল সংক্রান্ত পরিষেবাকেই প্রাধান্য দিয়ে সাফল্য পেয়েছিলেন কেজরিওয়াল ও আম আদমি পার্টি, গোয়া জয়েও সেই বিদ্যুতকেই হাতিয়ার করতে চাইছেন ‘মাফলার ম্যান’, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
চলতি বছরে দুবার গোয়াতে এসেছেন কেজরিওয়াল। ৪০ বিধানসভা আসন বিশিষ্ট এই ছোট রাজ্যে ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে আম আদমি পার্টি। দয়ানন্দা নারভেকর, বাবু নানোসকর, সত্যবিজয় নায়েক, রাজদ্বীপ নায়েক, গণপত গোনকর, রীতেশ ছোদঙ্করে মত নেতারা কেজরীবালের দলে যোগ দেওয়ার ফলে দল আগের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী হয়েছে। গোয়ার অধিবাসীদের মন জয়ে কর্মসংস্থানের ওপরও জোর দিচ্ছেন কেজরীবাল। কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি যুব সমাজের মন জয়ে সাহায্য করবে বলেই মত আপের। এই প্রতিশ্রুতির ওপর ভর করেই গোয়াতে সরকার গড়া সম্ভব বলেই মনে করছে আম আদমি পার্টি।