বারাণসী: কাশী বিশ্বনাথ মন্দির, দেশের অন্যতম বিখ্যাত মন্দির। শিবের দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অংশও এই মন্দির। দূর-দূরান্ত, দেশ-বিদেশ থেকে পুণ্যার্থীরা কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে পুজো দিতে আসেন মনোকামনা পূরণের জন্য। এত বড় ও এত জনপ্রিয় মন্দির, ভিড় তো হবেই। আর ভিড় সামলাতে, মন্দিরে নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রয়োজন পুলিশের। সাধারণ দিনে কড়া নিরাপত্তার চাদরেই মোড়া থাকে কাশী বিশ্বনাথ মন্দির। কিন্তু বুধবার মন্দিরে গিয়ে অবাক হয়ে যান ভক্তরা। দেখেন, মন্দির চত্বরে কোথাও পুলিশ নেই। হঠাৎ কী হল? এই ভাবতে ভাবতেই নজরে এল, ভিড় সামাল দিচ্ছেন ধুতি-কুর্তা পরা ও মাথায় গেরুয়া তিলক কাটা কয়েকজন। প্রথমে বুঝতে অসুবিধা হলেও, পরে জানা গেল, এরা আসলে পুলিশ! তা হঠাৎ পুলিশের বেশভূষায় এমন বদল কেন? পুলিশের তরফেই জানানো হল, এটা তাদের নতুন ইউনিফর্ম!
পুলিশ বলতে আমরা খাকি উর্দিধারীদেরই বুঝি। কিন্তু চলতি সপ্তাহের বুধবার থেকে হঠাৎ বদলে গিয়েছে যোগী রাজ্যের পুলিশের ইউনিফর্ম। কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে যারা ডিউটি করবেন, তাদের খাকি উর্দি নয়, পুজারির বসনই পরতে হবে। ধুতি, পাঞ্জাবী, গলায় উত্তরীয় ও রুদ্রাক্ষের মালা, কপালে গেরুয়া তিলক পরে আদ্যোপান্ত পুরোহিতের মতোই সেজে থাকবেন পুরুষ পুলিশকর্মীরা। মহিলা পুলিশ কর্মীদের দেখা যাবে গেরুয়া রঙের সালওয়ার-কামিজ ও ওড়নায়।
কেন হঠাৎ ইউনিফর্ম বদল? বারাণসীর পুলিশ কমিশনার মোহিত আগরওয়াল, যিনি এই ইউনিফর্ম বদলের নির্দেশ দিয়েছেন, তিনি জানান, আগত পুণ্যার্থীদের সঙ্গে পুলিশ যাতে মিলেমিশে যায়, তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত। মন্দিরের পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, পোশাক বাছা হয়েছে। ভিড় সামলাতে গিয়ে অনেক সময়ই পুণ্যার্থীদের রোষের মুখে পড়তে হয় পুলিশকে। কথা কাটাকাটি, হাতাহাতির ঘটনাও আকছার হয়। সেখানেই মন্দিরের পুরোহিতরা কিছু বললে, ভক্তরা তা শোনেন। পুলিশের কাজ সহজ করতে এবং বন্ধুত্বপূর্ণ ভাবমূর্তি তৈরি করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুলিশদের মৃদুভাষীও হতে বলা হয়েছে।
হঠাৎ এই ইউনিফর্ম বদল নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে সমাজবাদী পার্টি। তাদের প্রশ্ন, পুলিশ কমিশনার বা মন্দির কর্তৃপক্ষের কি নিরাপত্তারক্ষীদের ইউনিফর্ম বদল করে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে? নির্বাচনের মুখে এই ইউনিফর্ম বদল আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন। ধার্মিক ট্যাগ দিয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশদের।