নয়া দিল্লি: ঋতুচক্র কোনও রোগ বা শারীরিক সমস্যা নয়, তবে এই সময়ে ঋতুমতী মহিলারা নানা শারীরিক কষ্ট সহ্য করেন। মহিলাদের সমস্যার কথা মাথায় রেখেই একাধিক দেশে চালু করা হয়েছে মেনেস্ট্রুয়েশন লিভ (Menstruation Leave) বা ঋতুকালীন ছুটি। ভারতেও কি এই ছুটি চালু করা হবে? কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি (Smriti Irani)-র কাছে এই প্রশ্নই রেখেছিলেন আরজেডি সাংসদ মনোজ কুমার ঝা (Manoj Kumar Jha)। তাতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর উত্তর, “সবেতন ছুটির কোনও প্রয়োজন নেই কারণ এটা প্রতিবন্ধকতা নয়।”
বুধবার রাজ্যসভায় রাষ্ট্রীয় জনতা দলের সাংসদ মনোজ কুমার ঝা দেশের ঋতুকালীন পরিচ্ছন্নতা নীতি নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। জবাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বলেন, “ঋতুমতী মহিলা হিসাবে, ঋতুস্রাব ও ঋতুচক্র নারী জীবনের অত্যন্ত সাধারণ একটি অংশ। আমাদের এমন ইস্যু তৈরি করা উচিত নয় যেখানে তাদের সমানাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হবে শুধুমাত্র একজনের নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গির কারণে, যার ঋতুস্রাব হয় না।”
সমানাধিকারের প্রসঙ্গ তুলেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, ঋতুচক্রের জন্য সবেতন ছুটি দেওয়ার নীতি আনার প্রয়োজন নেই। তিনি জানান, এটা প্রতিবন্ধকতা নয়।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরও ঋতুচক্র ও সেই সংক্রান্ত ছুটি নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। তখনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বলেন, “সমস্ত কর্মক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকভাবে ঋতুকালীন ছুটি দেওয়া নিয়ে কোনও প্রস্তাবনা আপাতত বিবেচনা করে দেখছে না সরকার।”
বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লিখিত জবাবে বলেন, “অল্প সংখ্যক মহিলা অত্যাধিক ডিসমেনোরিয়া বা এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা ওষুধের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু ঋতুচক্র ও তার সঙ্গে জড়িত কার্যকলাপকে আড়ালে রাখা হয়। সামাজিক ছুৎমার্গের কারণে স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়। সাধারণ কাজ করতে বাধা দেওয়া হয়, যা শেষ অবধি হেনস্থা ও সমাজে বিতাড়িত করার পর্যায়ে পৌঁছয়। যখন কোনও কিশোরী শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায় এবং এই পরিবর্তন সম্পর্কে অবগতই না হয়, তখন বিষয়টি আরও স্পর্শকাতর হয়ে ওঠে।”
এর আগে গত অক্টোবর মাসে কেন্দ্রের তরফে ঋতুকালীন পরিচ্ছন্নতা সংক্রান্ত একটি খসড়া প্রস্তাবনা আনা হয়ছিল, যেখানে কর্মক্ষেত্রে ঋতুমতী মহিলাদের ছুটির স্বপক্ষেই বলা হয়েছিল।