নয়া দিল্লি: দূরপাল্লার ট্রেন সফরে খাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেউ কেউ বাড়ি থেকেই খাবার নিয়ে ট্রেনে চাপেন, আবার কেউ কেউ ট্রেনেই খাবার কিনে খান। এছাড়াও বর্তমানে পছন্দের রেস্তোরাঁ থেকে খাবার অর্ডার করারও সুযোগ আছে। খাবার এবং পানীয়ের জন্য একটি প্যান্ট্রি কার থাকে ট্রেনে। এটি ছাড়াও রেল স্টেশনগুলিতে খাবারের স্টল থাকে, সেখান থেকেও খাবার কিনে খাওয়া যায়। তবে ভারতে এমন একটি ট্রেনও চলে, যাতে খাবার পাওয়া যায় একেবারে বিনামূল্যে। একবার নয়, পুরো যাত্রায় মোট ৬ বার দেওয়া যায় খাবার। অর্থাৎ কোনও খরচ ছাড়াই পেট ভরে খেতে পারেন ট্রেনে বসেই।
সচখণ্ড এক্সপ্রেস (12715) নামে এই ট্রেনে যাতায়াত করতে গেলে যাত্রীদের খাবার নিয়ে কোনও চিন্তা করতে হবে না। তারা বিনামূল্যে খাবার পায়। গত বহু বছর ধরে এই ট্রেনে যাত্রীদের জন্য বিশেষ ‘লঙ্গর’ পরিবেশন করা হচ্ছে। সচখণ্ড এক্সপ্রেস ৩৯টি স্টেশনে থামে। এই রুটে মোট ৬টি স্টেশনে যাত্রীদের জন্য লঙ্গর রয়েছে। মানুষ যাতে আরামে লঙ্গর খেতে পারে সেই অনুযায়ী ট্রেনও সেইসব স্টেশনে থামে।
২৯ বছর ধরে চলছে এই রীতি। অমৃতসর-নান্দেড সচখণ্ড এক্সপ্রেসে যাত্রীদের বিনামূল্যে খাবার দেওয়া হয়। যাত্রীদের সঙ্গে শুধু বাসন রাখতে হয়। মোট ২০৮১ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে এই ট্রেন। ট্রেনে প্যান্ট্রিও আছে, কিন্তু সেখানে খাবার রান্না করা হয় না।
আসলে, সচখণ্ড এক্সপ্রেস শিখদের দুটি বৃহত্তম ধর্মীয় স্থান, অমৃতসরের শ্রী হরমন্দর সাহেব এবং নান্দেদের (মহারাষ্ট্র) শ্রী হুজুর সাহেব সচখণ্ডে যায়। সেই কারণেই যাত্রাপথে বছরের পর বছর ধরে লঙ্গর প্রসাদ পরিবেশন করা হয়। ডাল-ভাত, ছোলার ডাল, মুসুর ডাল, খিচুড়ি, আলু-বাঁধাকপি সবজি, শাক- এই সব পাওয়া যায় লঙ্গরে।
১৯৯৫ সাল এই ট্রেনের যাত্রা শুরু। এটি সপ্তাহে পাঁচদিন চলত, পরে প্রতিদিনই চালানো হয় ট্রেন। এই লঙ্গরটি একজন ব্যবসায়ী শুরু করেছিলেন। বর্তমানে প্রতিদিন ২০০০ লোকের জন্য লঙ্গর তৈরি করা হয়।