নয়া দিল্লি : কয়েকদিন ধরেই একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, একটি তাঁবুর তলায় কয়েকজন সাধারণ নাগরিকের সঙ্গে দাঁড়িয়ে রয়েছেন সেনা জওয়ানরা। বলা হচ্ছিল, তাঁরা নাকি পঞ্জাব রেজিমেন্টের জওয়ান এবং তাঁরা নাকি কৃষকদের সঙ্গে তাঁদের বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন। তাহলে কি কৃষক বিক্ষোভে সমর্থন করছে পঞ্জাব রেজিমেন্ট? চারিদিকে হুলুস্থুল শুরু হয়ে গিয়েছিল ওই ভিডিয়োটি ঘিরে। তবে এবার সেই সব আলোচনায় ইতি টানল ভারতীয় সেনা। সেনার তরফে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, ওই ভিডিয়োটি ঘিরে যে দাবি করা হচ্ছে, তার আসলে কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই। যা বলা হচ্ছে, পুরোটাই ভুল।
সেনার তরফে জানানো হয়েছে, ওই ভিডিয়োতে যে সাধারণ নাগরিকদের দেখা যাচ্ছে, তাঁরা আসলে প্রাক্তন সেনাকর্মী। তাঁরা সেই ইউনিটের বর্তমান সেনাকর্মীদের জন্য চা-চক্রের আয়োজন করেছিলেন।
সেনার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে, যাতে দেখা যাচ্ছে ভারতীয় সেনা জওয়ানরা একটি তাঁবুর নিচে কিছু সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছেন। বলা হচ্ছে যে, পঞ্জাব রেজিমেন্টের জওয়ানরা কিছু কৃষকের সঙ্গে মিলে বিক্ষোভ করছে। এই খবর সম্পূর্ণ ভুয়ো।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৬ নভেম্বর থেকে কৃষকরা কৃষি আইনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করছেন। কৃষকদের আশঙ্কা, নতুন কৃষি আইন চালু হয়ে গেলে ফসলের উপর বেসরকারি সংস্থার অধিকার চলে আসবে এবং তাঁরা ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হবেন। কেন্দ্রের থেকে একাধিকবার কৃষক নেতাদের আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছিল। এমনকী বিক্ষোভ প্রশমনের জন্য আইনে সংশোধন করার প্রস্তাবও দেওযা হয়েছিল। কিন্তু কৃষক নেতাদের বক্তব্য ছিল, আইন সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করতে হবে।
কেন্দ্রের থেকে বারবার বলা হয়েছে, নতুন কৃষি আইনে কৃষকদের স্বার্থ উপেক্ষিত হবে না। বরং কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্যই এই তিনটি আইন আনা হয়েছে। এই আইনগুলি চালু হলে, কৃষিক্ষেত্রে মধ্যসত্ত্বাভোগীদের হাত থেকে মুক্তি পাবেন কৃষকরা।
এদিকে কিছুদিন আগেই গম, বার্লি, ছোলা, মুসুর ডাল, সরষে এবং সূর্যমুখীর উপরও ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০২১-২২ আর্থিক বছরের জন্য গমের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ২ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। আগে প্রতি কুইন্টাল গম ১ হাজার ৯৭৫ টাকায় কিনত কেন্দ্র। এখন থেকে তা ২ হাজার ১৫ টাকায় কেনা হবে। অর্থাৎ, প্রতি কুইন্টালে ৪০ টাকা করে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়াচ্ছে কেন্দ্র। বার্লির ন্যূনতম সহায়ক মূল্য প্রতি কুইন্টালে ১ হাজার ৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১ হাজার ৬৩৫ টাকা। কুইন্টাল পিছু ছোলার ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ১৩০ টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫ হাজার ২৩০ টাকা। সূর্যমুখীর দানা প্রতি ১০০ কেজিতে বেড়েছে ১১৪ টাকা।
মুসুর ডাল এবং সরষের উপর ন্যূনতম সহায়ক মূল্য কুইন্টাল পিছু বাড়ানো হয়েছে ৪০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ২০২১-২২ আর্থিক বছরের জন্য উভয় ক্ষেত্রে কুইন্টাল পিছু ন্যূনতম সহায়ক মূল্য করা হয়েছে যথাক্রমে ৫ হাজার ৫০০ টাকা এবং ৫ হাজার ৫০ টাকা।
আরও পড়ুন : অশান্তির সংকেতে বন্ধ ইন্টারনেট! মাথা ফাটানো হুঙ্কারের পরোয়া না করেই কাল কারনালে কৃষক মহাপঞ্চায়েত