ক্যানবেরা: গত কয়েক সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহরে পরপর তিনটি হিন্দু মন্দিরে ভাংচুর হয়েছে। বৃহস্পতিবার, ক্যানবেরায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের পক্ষ থেকে এই ঘটনাগুলির তীব্র নিন্দা করা হল। গত সোমবার, মেলবোর্নের অ্যালবার্ট পার্কের ইসকন মন্দিরের দেওয়ালে ভারত বিরোধী গ্রাফিতি দেখা গিয়েছিল। মন্দিরের গায়ে ‘হিন্দুস্তান মুর্দাবাদ’ লিখে দিয়ে গিয়েছিল অজ্ঞাত পরিচয় কিছু ব্যক্তি। এর পিছনে খালিস্তানপন্থীদের হাত রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এদিন ভারতীয় হাই কমিশন বলেছে, “সাম্প্রতিক সপ্তাহে মেলবোর্নে তিনটি হিন্দু মন্দির ভাংচুরের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে ভারতীয় হাই কমিশন। যেভাবে পরপর এবং দায়িত্বহীনভাবে ভাঙচুর চলছে, তা অত্য়ন্ত উদ্বেগজনক। কারণ ওই গ্রাফিতিতে ভারত-বিরোধী সন্ত্রাসবাদীদের গৌরবান্বিত করা হয়েছে। এই ঘটনাগুলি শান্তিপূর্ণ বহুত্ববাদী এবং বহু-সংস্কৃতির ভারতীয়-অস্ট্রেলীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘৃণা ও বিভেদ তৈরির চেষ্টা ছাড়া কিছু নয়।”
ভারতীয় হাই কমিশনের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এই ঘটনাগুলি থেকে বোঝা যাচ্ছে যে অস্ট্রেলিয়ায় খালিস্তানপন্থীদের কর্মকান্ড ক্রমে বাড়ছে। বেশ কিছু সময় ধরে শিখস ফর জাস্টিস এবং অস্ট্রেলিয়ার বাইরে থেকে অন্যান্য শত্রু মনোভাবাপন্ন সংস্থাগুলি তাদের সহায়তা করছে। কমিশন আরও জানিয়েছে, ভারত বারংবার অস্ট্রেলীয় সরকারের কাছে এই নিয়ে উদ্বেগ প্রতাশ করেছে। তারা বলেছে, “আশা করা যায়, অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার পাশাপাশি এর পরে যাতে এই ধরনের কাজ আর না হয়, তার জন্যও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন এবং সিডনিতে, নিষিদ্ধ সংগঠন শিখস ফর জাস্টিস যে গণভোট আয়োজনের ঘোষণা করেছে, তাই নিয়ে আমাদের উদ্বেগও অস্ট্রেলীয় সরকারকে জানানো হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায় এবং তাদের সম্পত্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে সরকারকে। ভারতের আঞ্চলিক অখণ্ডতা, নিরাপত্তা এবং জাতীয় স্বার্থের পক্ষে ক্ষতিকারক কর্মকান্ডের জন্য যাতে কেউ অস্ট্রেলিয়ার ভূখণ্ড ব্যবহার না করতে পারে, তা নিশ্চিত করার অনুরোধও করা হয়েছে অস্ট্রেলীয় সরকারকে।”
মেলবোর্ন পার্কে ইসকন মন্দিরে গায়ে ভারত বিরোধী গ্রাফিতি আঁকার আগে, একই ঘটনা ঘটেছিল অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত আরও দুই হিন্দু মন্দিরে। ১২ জানুয়ারি, মেলবোর্নের স্বামীনারায়ণ মন্দিরের গায়ে প্রথম ভারত-বিরোধী গ্রাফিতি দেখা গিয়েছিল। এরপর ১৬ জানুয়ারি, ভিক্টোরিয়ার প্রদেশের কারুম ডাউনসের ঐতিহাসিক শিব-বিষ্ণু মন্দিরও একইভাবে অপবিত্র করা হয়েছিল। এরপর ভিক্টোরিয়া প্রদেশে বিভিন্ন ধর্মের নেতাদের এক জরুরী বৈঠক হয়। ওই বৈঠকের পর, খালিস্তানপন্থীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ করে নিন্দা করা হয়েছিল। তার পর মাত্র দুই দিন পরই হামলা হয় ইসকন মন্দিরে।