Indian Army Honey Trap: ‘অঙ্কিতা’ এবং ‘নিশা’ – দুই মহিলার প্রেমের ফাঁদে ফেঁসে ধৃত বাংলার সেনা জওয়ান!
Rajasthan: দুই মহিলার প্রেমের ফাঁদে পড়ে চরবৃত্তিতে জড়াল ভারতীয় সেনার এক জওয়ান। বাংলার বাসিন্দা ওই জওয়ান রাজস্থানে মোতায়েন ছিল।
জয়পুর: একজনের নাম ছিল গুর্নুর কওর ওরফে অঙ্কিতা। আরেকজন নিশা। দুইজনের সঙ্গেই হোয়াটসঅ্যাপে নিয়মিত কথা হত। এমনকি, ভয়েস কল ও ভিডিয়ো কল পর্যন্ত হত। আর তার মাঝেই তাঁর রেজিমেন্ট সংক্রান্ত বেশ কিছু স্পর্শকাতর তথ্য ভাগ করে নিয়েছিল ২৪ বছরের ভারতীয় সেনা জওয়ান, শান্তিময় রানা। সে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। রাজস্থানে মোতায়েন ছিল। বুধবার (২৭ জুলাই) রাজস্থান পুলিশ জানিয়েছে, ওই সেনা জওয়ানকে চরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রাজস্থান পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল উমেশ মিশ্র জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং হোয়াটসঅ্যাপে ওই দুই মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল শান্তিময়ের। গুর্নুর কওর ওরফে অঙ্কিতা নামের মহিলাটি দাবি করেছিল, সে উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুরের বাসিন্দা। সে আরও জানিয়েছিলেন, সে মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসে কাজ করে। আর নিশা নামের মহিলাটি দাবি করেছিল, সে মিলিটারি নার্সিং সার্ভিসে কাজ করে। দুই জনের কথাই চোখ বুজে বিশ্বাস করেছিল শান্তিময়। অথচ, ওই দুই মহিলাই পাকিস্তানি গুপ্তচর বাহিনী আইএসআই-এর এজেন্ট বলে দাবি করেছে রাজস্থান পুলিশ।
তারা আরও জানিয়েছে, ২০১৮ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন শান্তিময়। তার কয়েকদিন পর থেকেই তাকে নিশানা করেছিল ওই দুই আইএসআই এজেন্ট। তাদের ফেলা ফাঁদে পা দিতে দেরি করেনি শান্তিময়। তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেই ওই দুই পাক এজেন্ট তার রেজিমেন্ট সম্পর্কে অনেক কৌশলগত তথ্য আদায় করে নিয়েছিল। এমনকি, বাহিনীর যুদ্ধ অনুশীলনের বহু ছবি ও ভিডিয়োও ওই মহিলাদের পাঠিয়েছিল শান্তিময়, এমনই দাবি পুলিশের। তবে শুধু প্রেমের ফাঁদ নয় রাজস্থান পুলিশের অভিযোগ, এই সব স্পর্শকাতর তথ্য পাচার করার বিনিময়ে ওই দুই মহিলার কাছ থেকে অর্থও নিয়েছিল শান্তিময়। প্রাথমিক তদন্তের পর, মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) শান্তিময় রানাকে গ্রেফতার করেছে রাজস্থান পুলিশ। তার মোবাইল ফোনের প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণও করা হয়েছে। তারপর, তার বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ধারা অনুসারে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত কয়েক বছরে বারবারই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের বিপদ নিয়ে ভারতীয় সেনা জওয়ানদের সতর্ক করেছে ভারতীয় সেনা। সেনার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সোশ্যাল মিডিয়া এবং হোয়াটসঅ্যাপে আইএসআই এজেন্টরা প্রেমের ফাঁদ ফেলতে পারে। কিংবা অন্য কোনওভাবে ভারতীয় সেনা জওয়ানদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। ২০২০ সালেই সেনার অফিসারদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ার বা ডিলিট করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। নৌসেনা কর্তাদের তো ঘাঁটিতে বা ডকইয়ার্ডে স্মার্টফোন নিয়ে আসাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো নিরাপদ নয় বলে বারবার সতর্ক করা হয়েছে। পাশাপাশি, জুম-এর মতো ভিডিয়ো কলিং অ্যাপ-সহ বেশ কিছু চিনা অ্যাপ ব্যবহার করাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু, তারপরও আইএসআই এজেন্টদের হানিট্র্যাপের বিপর্যয় এড়ানো যাচ্ছে না।