নয়া দিল্লি: বুধবার (২৭ জুলাই) মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির জন্য ‘এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট’ (ইওআই) বা আগ্রহপত্র আহ্বান করল কেন্দ্র। ভারতে এখন পর্যন্ত মাঙ্কিপক্সের চারটি ঘটনা নিশ্চিত করা গিয়েছে। তারপরই সরকারের পক্ষ থেকে এই আহ্বান জানানো হল। অন্যদিকে, একইদিনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস অ্যাধনাম ঘেব্রেইসাস জানিয়েছেন, এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে যাদের ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি, বিশ্বব্যাপী সেই জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করতে অন্তত ৫০ লক্ষ থেকে ১ কোটি ডোজ মাঙ্কিপক্স ভ্যাকসিন প্রয়োজন। প্রসঙ্গত, গুটিবসন্তের ভ্যাকসিনই মাঙ্কিপক্সের ক্ষেত্রে কার্যকরী বলে ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে। যে দেশগুলির হাতে গুটিবসন্তের টিকা রয়েছে, মাঙ্কিপক্স প্রাদুর্ভাবের সময় সেই টিকা বাকি বিশ্বের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন হু-এর ডিরেক্টর জেনারেল। এর আগে করোনাভাইরাস টিকার ক্ষেত্রেও একইরকমের আহ্বান জানিয়েছিল হু। তবে শেষ পর্যন্ত, কোনও দেশই সেই আহ্বানে সাড়া দেয়নি।
বুধবার, মাঙ্কিপক্স রোগের বিরুদ্ধে একটি ভ্যাকসিন তৈরিতে যৌথ সহযোগিতার জন্য, ভারত সরকারের পক্ষ থেকে অভিজ্ঞ ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক ও ইন-ভিট্রো ডায়াগনস্টিক কিট প্রস্তুতকারকদের কাছ থেকে ইওআই চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ডায়াগনস্টিক কিট নির্মাতাদের, রোগ শনাক্ত করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ডায়াগনস্টিক কিট তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে আগ্রহপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১০ অগস্ট। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ বা আইসিএমআর (ICMR) জানিয়েছে, টিকা তৈরির জন্য ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারকদের প্রয়োজনীয় মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের স্ট্রেন তারাই দেবে। এক বিবৃতিতে আইসিএমআর জানিয়েছে, মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের টিকা ও রোগ নির্ণয়ের কিট তৈরি করতে চায় তারা। টিকা নির্মাতা ও রোগ নির্ণয় কিট নির্মাতাদের সঙ্গে যৌথভাবে গবেষণা করা হবে। এর জন্য যেকোনও ধরনের ননএক্সক্লুসিভ চুক্তি করতে তারা প্রস্তুত। সূত্রের খবর, সরকারের এই আহ্বান আসার আগে থেকেই, একাধিক ফার্মা সংস্থা মাঙ্কিপক্সের একটি সম্ভাব্য ভ্যাকসিন তৈরির জন্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে।
বাজারে মাঙ্কিপক্সের যে টিকাগুলি রয়েছে, তার মধ্যে সবথেকে নিরাপদ হল ডেনমার্কেপ ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা ব্যাভারিয়ান নর্ডিকের তৈরি টিকা জিনিওস ভ্যাকসিন। সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের ডেনমার্কের কারখানায় তৈরি টিকার ডোজ ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন এবং ইউরোপীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রকরা। মার্কিন ওষুধ নিয়ন্ত্রকদের দাবি, আমেরিকায় এখন যে মাঙ্কিপক্স টিকার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে, এই অনুমোদনের ফলে তা পূরণ হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বর্তমানে বিশ্বের ৭৮টি দেশ থেকে ১৮,০০০-এরও বেশি মাঙ্কিপক্সের ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছে। অধিকাংশই ইউরোপীয় দেশগুলি থেকে রিপোর্ট করা হয়েছে। ইতিমধ্য়েই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, মাঙ্কিপক্সের এই প্রাদুর্ভাবের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।