নয়া দিল্লি: দেশের ক্রমবর্ধমান পরিকাঠামোর চাহিদা মেটাতে উপযুক্ত মানব সম্পদ তৈরি করবে, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধনী) বিল ২০২২। বুধবার (৩ অগস্ট) এমনটাই বলেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। দুদিন আগে, সোমবারই (১ অগস্ট) এই বিলটি লোকসভায় পেশ করা হয়েছিল। বিশ্ব মানের মাল্টি-মোডাল, মাল্টি-সেক্টরাল অ্যাকাডেমিক ইকোসিস্টেম গড়ে তোলাই এই বিলের লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধনী) বিল ২০২২-এর আওতায় গতি শক্তি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করছে কেন্দ্র। এই বিষয়ে ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেছেন, এই পরিকল্পনায় বিভিন্ন বিভাগকে একীভূত করে নয়া পরিকাঠামো তৈরি করা হবে। সংশোধনী পাশ হওয়ার পর ভদোদরার ন্যাশনাল রেল অ্যান্ড ট্রান্সপোর্টেশন ইনস্টিটিউটটির নাম পরিবর্তন করে গতি শক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করা হবে। বছরের শেষেই গুজরাটের নির্বাচন। তার আগে সেই গুজরাটের ভদোদরাতেই তৈরি হতে চলেছে ভারতের প্রথম পরিবহন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
ভাদোদরার বিজেপি সাংসদ রঞ্জনাবেন ভট্ট বলেছেন, প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ নেওয়া অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। তাই এমন কোর্স চালুর প্রয়োজন, যা চাকরির নিশ্চয়তা দেবে। তিনি আরও বলেন, রাশিয়া, জাপান, চিন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশে ইতিমধ্য়েই এই ধরনের প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
জেডিইউ-এর কৌশলেন্দ্র কুমার বিলটিকে সমর্থন করেছেন। কিন্তু তিনি একইসঙ্গে পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং নালন্দা মহাবিহার বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা দেওয়ার দাবি তুলেছেন। বিজেডির চন্দ্র সেকাহার সাহু ওড়িশায় আরও কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি জানিয়েছেন। জম্মু ও কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্স পার্টির হাসনাইন মাসুদি বিলটিকে সমর্থন করলেও প্রশ্ন তোলেন, সবসময় কেন গুজরাটেই এই ধরণের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে? তিনি বলেন, “আমার একমাত্র উদ্বেগ হল কেন সবকিছু গুজরাটে যাবে? এটা সমানভাবে বিতরণ করা উচিত। পহেলগামে পর্যটন ও আতিথেয়তার একটি ইনস্টিটিউটও প্রতিষ্ঠা করা উচিত।”
তবে, এই প্রতিষ্ঠানের সদর দফতর ভদোদরায় হলেও, সারা দেশেই এর ক্যাম্পাস থাকবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। সেগুলিকে উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। তিনি আরও জানান, পরিবহন একটি জটিল খাত এবং বিশ্বব্যাপী সব দেশেই এই ধরনের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি বলেছেন, এই ইনস্টিটিউটের ফোকাস প্রধান পাঁচটি বিষয়ের উপর থাকবে – পরিবহন কেন্দ্রিক কোর্স, দক্ষতা উন্নয়ন, ফলিত গবেষণা, প্রযুক্তি উন্নয়ন এবং পরিবহন অর্থনীতি ও পরিকাঠামোয় অর্থায়ন। তিনি আরও বলেছেন, “আমি বিশেষভাবে বিরোধীদের অনুরোধ করব ছাত্রদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলা না করে নিজেদের আসনে ফিরে যেতে। আমি তাদের সর্বসম্মতিক্রমে বিলটিকে সমর্থন করার জন্য আহ্বান জানাই,”।
জেনে নেওয়া যাক কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধনী) বিল, ২০২২-এর মূল বৈশিষ্ট্যগুলি –
গতি শক্তি বিশ্ববিদ্যালয়: বিলটি ভদোদরার ন্যাশনাল রেল অ্যান্ড ট্রান্সপোর্টেশন ইনস্টিটিউটকে গতি শক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করবে। এটি হবে একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। রেল মন্ত্রকের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থায়ন করবে।
শিক্ষার পরিধি – পরিবহন, প্রযুক্তি এবং ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত ক্ষেত্রে মানসম্পন্ন শিক্ষাদান, গবেষণা এবং দক্ষতা বিকাশের ব্যবস্থা করা হবে। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বিদেশেও স্থাপন করা হতে পারে। এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ফলে পরিবহন সেক্টরে প্রশিক্ষিত মেধার চাহিদা পূরণ হবে।
একজন নতুন ভাইস-চ্যান্সেলর নিয়োগ: এই আইন হওয়ার পর থেকে ছয় মাস পর্যন্ত বা গতিশক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নতুন উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত (যেটি আগে হবে) ন্যাশনাল রেল অ্যান্ড ট্রান্সপোর্টেশন ইনস্টিটিউটের বর্তমান ভিসিই গতিশক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস ত্যান্সেলর পদে থাকবেন।