Israel-Hamas War: ‘মাথার উপর দিয়ে যখন রকেট যাচ্ছিল, ভয়ে কাঁপছিল বুক’, ইজরায়েল থেকে ফিরে বললেন দমদমের পৌষালী

ঈপ্সা চ্যাটার্জী |

Oct 13, 2023 | 2:43 PM

Israel-Hamas War: পৌষালী বলেন, "ইজরায়েল শুক্র ও শনিবার উইকএন্ড থাকে। ওত সকালে আমরা উঠি না। কিন্তু শনিবার সকাল সাড়ে ৬টা-৭টা নাগাদ সাইরেন শুনতে পাই। ইজরায়েলে যখনই রকেট অ্যাক্টিভেট হয়, তখনই এই সাইরেন বাজে। ইউনিভার্সিটির ডর্মে থাকি আমরা। নীচেই বম্ব শেল্টার আছে।"

Israel-Hamas War: মাথার উপর দিয়ে যখন রকেট যাচ্ছিল, ভয়ে কাঁপছিল বুক, ইজরায়েল থেকে ফিরে বললেন দমদমের পৌষালী
ইজরায়েল থেকে দেশে ফিরলেন পৌষালী।
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

নয়া দিল্লি: হঠাৎ কানে এসেছিল সাইরেন। টের পেয়েছিলেন, কোনও বিপদ হয়েছে। কিন্তু রীতিমতো যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে, তা আন্দাজও করতে পারেননি দমদমের পৌষালী মুখোপাধ্যায়। উচ্চশিক্ষার জন্য ইজরায়েলে গিয়েছিলেন তিনি। শুক্রবার ভারতের ‘অপারেশন অজয়ে’র অধীনে প্রথম বিমানে ইজরায়েল থেকে ভারতে ফিরলেন তিনি। যুদ্ধের শুরু থেকে বিগত এক সপ্তাহে কী কী ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন, তাই-ই টিভি৯ বাংলার সঙ্গে ভাগ করে নিলেন পৌষালী।

যুদ্ধ পরিস্থিতির মাঝে ইজরায়েলে প্রায় ১৮ হাজার ভারতীয় আটকে রয়েছেন। তাদের ফেরাতে তৎপর ভারত সরকার। শুক্রবারই অপারেশন অজয়ের অধীনে বিশেষ বিমানে ইজরায়েল থেকে দিল্লিতে ফেরেন ২৩০ জন ভারতীয়। তাদের মধ্যেই একজন পৌষালী। ইজরায়েলের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টরেট করছেন তিনি। সে দেশে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরই ভারতে ফিরে আসার চেষ্টা করছিলেন পৌষালী। কিন্তু বিমান বাতিল হয়ে যাওয়ায় ফেরার কোনও উপায় খুঁজে পাচ্ছিলেন না।

এ দিন বিশেষ বিমানে দেশে ফেরার পর টিভি৯ বাংলার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে পৌষালী বলেন, “ইজরায়েল শুক্র ও শনিবার উইকএন্ড থাকে। ওত সকালে আমরা উঠি না। কিন্তু শনিবার সকাল সাড়ে ৬টা-৭টা নাগাদ সাইরেন শুনতে পাই। ইজরায়েলে যখনই রকেট অ্যাক্টিভেট হয়, তখনই এই সাইরেন বাজে। ইউনিভার্সিটির ডর্মে থাকি আমরা। নীচেই বম্ব শেল্টার আছে। নিয়ম রয়েছে, সাইরেন বাজলে ১ মিনিটের মধ্যে বম্ব শেল্টারে আশ্রয় নিতে হবে। সেই মতোই ১ মিনিটের মধ্যেই আমরা নীচে আসি। প্রায় ১০ মিনিট বম্ব শেল্টারে ছিলাম।পরে উপরে আসি। কিন্তু আবারও সাইরেন বাজে। এভাবেই বারবার সাইরেন বাজতে থাকে। বুঝতে পারি বড় কিছু একটা ঘটেছে। রবিবারও বারবার সাইরেন বাজে।”

পৌষালী জানান, সংবাদমাধ্য়মেই প্রথম জানতে পারেন হামাস ইজরায়েলের উপরে আক্রমণ করেছে। যুদ্ধ শুরু হয়েছে। কীভাবে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেশে ফিরলেন, তার বর্ণনা করে পৌষালী বলেন, ” বিরসাভার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি আমি। শনিবার প্রথম সাইরেনের পর ঘরে ফিরেই মা-বাবাকে গোটা পরিস্থিতির জানাই। কথা বলার মাঝেও সাইরেন বেজে  ওঠে। ইজরায়েলে রেড অ্যালার্ট, হোম ফ্রন্ট অ্যালার্ট রয়েছে। মোবাইলেও ট্রাক করা যায় কোথায় রকেট বর্ষণ হচ্ছে। গোটা ঘটনার সময়ই খুব আতঙ্কিত ছিলাম আমি। কীভাবে ফিরব, বিমানবন্দরে আসার সময় যদি রকেট পড়ে, এইসব ভাবছিলাম। পরে কয়েকজন পড়ুয়া ভারতীয় দূতাবাসে যোগাযোগ করি। আজ অপারেশন অজয়ের অধীনে প্রথম বিমানে দেশে ফিরতে পারলাম।”

পৌষালী জানান, ইজরায়েলের যে বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি পোস্ট ডক্টরেট করছেন, সেখানে নিয়ম রয়েছে, কোনও পক্ষের হয়ে সংবাদমাধ্যমে কিছু বলতে পারেন না। তাও তিনি বলেন, “ভয়াবহ পরিস্থিতি ওখানে। বাচ্চাদের মেরে ফেলা হচ্ছে। মহিলাদের উপরে অত্যচার করা হচ্ছে। ওখানে যারা আটকে রয়েছেন, তারা খুব চিন্তিত। আমিও খুব ভয় পাচ্ছিলাম যখনই মাথার উপর দিয়ে রকেট যাচ্ছিল।”

যুদ্ধ শুরুর পর তাদের পরিস্থিতি কতটা কঠিন হয়ে গিয়েছিল, তার বর্ণনা করতে গিয়ে পৌষালী বলেন, “যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই চরম খাবারের সঙ্কট দেখা দেয়। চা-বিস্কুট খেয়ে দিন কাটিয়েছি।”

যুদ্ধ কবে শেষ হবে, তারপর আর ইজরায়েলে ফিরতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। কারণ এর আগে ইউক্রেন যুদ্ধের পরও অনেক পড়ুয়া আর সে দেশে ফিরতে পারেননি। এই বিষয়ে পৌষালীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমি প্রফেসরের অনুমতি নিয়েই দেশে ফিরে এসেছি। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি যে পরিস্থিতি যেন দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে যায়।”

Next Article