নয়াদিল্লি: মহাকাশের বুকে ভারতের আস্ত একটা ল্যাবরেটরি। গোটা ল্যাবরেটরিটা পেটে নিয়ে মহাকাশে উড়ে গেল ইসরোর পিএসএলভি- এক্সএল রকেট। সেটা মহাকাশের বুকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে। আর সেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজটা হবে আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্সের মাধ্যমে। তৃতীয় দেশ হিসাবে মহাকাশে এমন একটা ল্যাবরেটরি পাঠাল ভারত।
মহাকাশের এই ল্যাবরেটরি ইসরোর তৈরি নয়। এটা তৈরি করেছে বেঙ্গালুরুর একটি স্টার্ট আপ কোম্পানি। ওই কোম্পানির নাম টেক-মি-টু-স্পেস। পাঁচজন কমবয়সী ছেলে-মেয়ে চার-পাঁচ বছর আগে কোম্পানিটা তৈরি করেছিলেন। এর আগে আমেরিকা বাদে অন্য কোনও দেশের স্টার্ট-আপ সংস্থা এমন সাফল্য পায়নি।
মহাকাশে এই ল্যাবরেটরিতে হবেটা কী? কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাই বা কোনও কাজ করবে? সোজা কথায় মহাকাশে রিয়েল টাইম ডেটাকে অ্যানালিসি করবে ও সেটা ইসরোর হাতে তুলে দেবে। এতে কী হবে? মহাকাশ নিয়ে আরও নিখুঁত তথ্য মিলবে। মহাকাশে স্যাটেলাইটের পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণে সুবিধা হবে। এমনকি স্যাটেলাইটের মধ্যে সংঘর্ষও এড়ানো যাবে। বৃহস্পতিবার মহাকাশের উদ্দেশে রওনা দেয় ভারতের মহাকাশ ল্যাবরেটরি। ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের প্রোবা থ্রি মিশনের অংশ হিসাবে এটি মহাকাশে পাঠাল ইসরো। সূর্যের মনমেজাজ আরও ভাল করে বুঝতে প্রোবা থ্রি’কে মহাকাশে পাঠাল ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন। আর একে মহাকাশে পৌঁছে দিচ্ছে ইসরোর পিএসএলভি-সি-ফিফটি নাইন রকেট। গতকাল এই অভিযান হওয়ার কথা ছিল। রওনা হওয়ার ৪৯ মিনিট আগে যান্ত্রিক ক্রটি ধরা পড়ায় উত্ক্ষপণ স্থগিত হয়ে যায়। ইসরো টুইট করে জানায়, উত্ক্ষপণ হবে বৃহস্পতিবার। সেইমতো এদিন শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে রকেটটি উৎক্ষেপণ করা হয়।
আর কয়েক বছরের মধ্যে নাসার মতোই ভিনগ্রহে প্রাণের সন্ধানে নামতে চলেছে ইসরো। এর প্রথম ধাপ- চলতি মাস থেকে লাদাখে ইসরোর অ্যানালগ মিশনে কাজ শুরু করলেন বিজ্ঞানীরা। ভিনগ্রহের মতো পরিবেশ তৈরি করে সেখানে প্রাণের সম্ভাবনা বিভিন্ন ভাবে খতিয়ে দেখতেই অ্যানালগ সেন্টারটি তৈরি হয়েছে। ভৌগলিক বৈশিষ্ট্যের কথা মাথায় রেখেই বেছে নেওয়া হয়েছে লাদাখকে। ইসরোর এক গবেষক বললেন, আমরা যত বেশি বাণিজ্য সফল হতে পারব, তত বেশি আন-কনভেনশনাল গবেষণায় টাকা ঢালতে পারব। এখন ইসরো প্রতি ১০০ টাকা খরচ করলে আড়াইশো টাকা আয় করে। এটা অন্তত সাড়ে তিনশো টাকায় নিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য। আর তাই নিজেদের বাণিজ্যিক সংস্থার উপর আরও বেশি ভরসা করছে ভারতের মহাকাশ বিজ্ঞান সংস্থা।