মহাকাশে বরবটি চাষ করবে ISRO, তাও আবার রিমোটে, বড় প্ল্যানিং করছে ভারত
ISRO: মহাকাশের মতো প্রতিকূল পরিবেশে আমরা যদি বীজ থেকে গাছের জন্ম দিতে পারি, অতি সামান্য পরিমাণ জলেই যদি কাজটা হয়ে যায়, তাহলে আগামিদিনে মানুষ মরু অঞ্চল কিংবা পৃথিবীর অতি খরাপ্রবণ অঞ্চলেও চাষবাস করতে পারবে।
নিউ ইয়ার্স ইভে কবিতা লিখতে চলেছে ইসরো। আর তাতেই নাকি ফলবে বরবটি। কী, শুনে হেঁয়ালির মতো মনে হচ্ছে তো। তাহলে খুলেই বলা যাক। ৩০-এ ডিসেম্বর মহাকাশে পাড়ি দিচ্ছে ইসরোর PSLV-C60 রকেট। সেই দুটো নতুন স্যাটেলাইট অরবিটে বসিয়ে দেবে। তবে, সেটা তো আর নতুন কথা কিছু নয়। নতুন কথা যেটা তা হল, এই মিশন আসলে ভারতের নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন তৈরির প্রস্তুতির মিশন।
এই মিশনে মূলত পরখ করে দেখা হবে space docking technologies-এ আমরা কতটা সড়গড় হয়েছি। সে জন্য একটা PSLV Orbital Experiment Module বা POEM তথা কবিতাকে পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপন করা হবে। তো এই কবিতাকে মোট ২৪টা অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল মহাকাশে বরবটি চাষ। ঠিক হয়েছে মহাকাশে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে, খুব সামান্য গ্র্যাভিটেশনে আটটা বরবটি বীজ থেকে আটটা চারা তৈরির চেষ্টা করা হবে। অন্তত দুটো পাতা যাতে গজায় সেটা দেখা হবে।
গবেষণার দায়িত্বে রয়েছে Vikram Sarabhai Space Centre-এর Orbital Plant Studies বিভাগ। তবে মহাকাশে চাষ করে লাভটা কী হবে! উত্তরটা হল, মহাকাশের মতো প্রতিকূল পরিবেশে আমরা যদি বীজ থেকে গাছের জন্ম দিতে পারি, অতি সামান্য পরিমাণ জলেই যদি কাজটা হয়ে যায়, তাহলে আগামিদিনে মানুষ মরু অঞ্চল কিংবা পৃথিবীর অতি খরাপ্রবণ অঞ্চলেও চাষবাস করতে পারবে।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে আটকে পড়ে সুনীতা উইলিয়ামস ও তাঁর সঙ্গী বুচ উইলমোর দুজনে মিলে এখন লেটুস চাষ করছেন বলে নাসা জানিয়েছে। গাছ কতটা ভালো হচ্ছে, সেই সমস্ত ডিটেলস জানা যায়নি। তবে, এটাও আপনাদের বলে রাখি নাসার লেটুস আর ইসরোর বরবটি কিন্তু এক নয়। সুনীতারা নিজেদের হাতে লেটুস ফলাচ্ছেন। আর এখানে বরবটি ফলবে রিমোটে।
একই সময়ে মুম্বইয়ের এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে লো গ্র্যাভিটিতে পালং শাকও ফলানো হবে। তারপর মহাকাশের ওই বরবটির সঙ্গে তুলনা করে দেখা হবে যে কোথায় কেমন রেজাল্ট আসছে। রোবটের সাহায্যে মহাকাশ বর্জ্য পরিষ্কার করা, মহাকাশ অভিযানে গ্রিন এনার্জির ব্যবহারের মতো আরও একাধিক অ্যাসাইনমেন্ট পোয়েমকে দেওয়া হয়েছে। এবারের মিশনের চরিত্র কিছুটা আলাদা হলেও আমরা আশা করতেই পারি যে সব চ্যালেঞ্জ সামলে অন্যান্যবারের মতো এবারও দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে ইসরো।