শ্রীনগর : সম্প্রতি বৈষ্ণোদেবীতে যাত্রীবাহী একটি বাসে আগুন লাগে। ঘটনায় প্রাণ হারান চারজন তীর্থযাত্রী। আহত হয়েছিলেন অন্তত ২৫ জন। এটি নিছক দুর্ঘটনা ছিল না। কারণ এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনার দায় স্বীকার করল একটি ছোটো সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। যাত্রী বোঝাই বাসে হামলার দায় স্বীকার করে ‘জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর ফ্রিডম ফাইটারস’ নামের এই সংগঠন একটি চিঠি প্রকাশ করে। সেই চিঠিতে তারা দাবি করেছে যে, বাসে আইইডি বিস্ফোরণের পিছনে রয়েছে তাদের একটি বিশেষ ইউনিট। চিঠিটি মুহূর্তেই সোশ্যাল মিডিয়ার ওয়ালে ওয়ালে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। চিঠিতে নাদিম চৌধুরী নামের এক ব্যক্তির স্বাক্ষরও ছিল। এই সংগঠনের তিনিই মুখপাত্র বলে জানা গিয়েছে।
সেই চিঠিতে কী লেখা ছিল? হামলার স্বীকারোক্তি ছিল সেই চিঠি। চিঠিতে লেখা ছিল, “ধর্মীয় তীর্থযাত্রীদের ছদ্মবেশে হিন্দুত্ববাদী শাসকরা জম্মু ও কাশ্মীরের জনসংখ্যার পরিবর্তনের আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু আমরা প্রতিটি ধাপে তাঁদের এই অপপ্রচার নষ্ট করে দেব। জম্মু, উধামপুর ও রাজৌরিতে হওয়া কিছু হামলার সঙ্গে এই বিস্ফোরণের যোগ রয়েছে। যাঁরা এখানকার নন তাঁদের এই বিতর্কিত অঞ্চলে না আসার জন্য সতর্ক করছি। বহিরাগতদের কামানের গোলা হিসেবে ব্যবহার করছে হিন্দুত্ববাদী শাসক।” চিঠির শেষভাগে লেখা রয়েছে, “আমরা জম্মুর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়দের এই সব বহিরাগত ও হিন্দুত্ববাদী এজেন্টদের থেকে দূরে থাকার বিষয়ে সতর্ক করছি। ভবিষ্যতেও এই উদ্দেশ্যে আমার হামলা জারি থাকবে।” তবে টিভি৯ বাংলা এই চিঠির সত্যতা যাচাই করেনি।
তবে এই ধরনের দাবি উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। এক বর্ষীয়ান পুলিশ আধিকারিক বলেছেন, পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত করছে। কিন্তু তারা এই চিঠির সত্যতা নিশ্চিত করতে পারছেন না। পুলিশ আধিকারিক বলেছেন, “জম্মু ও কাশ্মীরে এই নামের কোনও জঙ্গি সংগঠনের অস্তিত্ব নেই। যদিও আমরা সব দিক থেকে এই ঘটনা খতিয়ে দেখছি।” শনিবার সন্ধেবেলা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখে। সেখানে থেকে নমুনাও সংগ্রহ করেন তাঁরা। কেন্দ্রের এই দলে ছিলেন কয়েকজন বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞও। পুলিশ আধিকারিক বলেছেন, “তাঁদের সঙ্গে এফএসএল (Forensic Science Laboratory) ও আইবি (Intelligence Bureau) সেখানে গিয়েছিল। সেখানে এরকম (সন্ত্রাসবাদী হামলার) কোনও ঘটনাার প্রমাণ মেলেনি। তদন্ত জারি রয়েছে।”