শ্রীনগর: সপ্তাহের শুরুতে জঙ্গি দমন অভিযান শুরু করেছিল উপত্যকার পুলিশ ও সেনা বাহিনী। সপ্তাহ শেষেও জারি রয়েছে সেই অভিযান। টানা চারদিন ধরে এনকাউন্টার (Encounter) অভিযান চলছে জম্মু-কাশ্মীরের (Jammu Kashmir) অনন্তনাগে (Anantanag)। ইতিমধ্যেই সেনা-জঙ্গির সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন তিন জওয়ান ও এক পুলিশকর্মী। অন্যদিকে, জঙ্গিদের ধরতে রকেট লঞ্চারও আনা হয়েছে। ব্যবহার করা হচ্ছে গ্রেনেড (Grenade)। শেষ খবর অনুযায়ী, চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয়েছে জঙ্গিদের। এখন তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করা ছাড়া উপায় নেই। তবে হাল ছাড়ছে না জঙ্গিরা। এখনও গুলির লড়াই চলছে লাগাতার। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে যে কয়েক ঘণ্টার জঙ্গি দমন অভিযান কীভাবে চারদিনের এনকাউন্টার অভিযানে পরিণত হল?
সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, অনন্তনাগের কোকোরনাগের গাদোল জঙ্গলে চলা এনকাউন্টার অভিযানে সবথেকে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াচ্ছে চড়াই পাহাড় ও গভীর জঙ্গল। জঙ্গিরা যেহেতু আগেই জঙ্গলে লুকিয়ে ছিল, তাই পথ সম্পর্কে তারা অবগত। সেখানেই সেনা বাহিনীর কাছে এই গভীর জঙ্গলের পথ অনেকটাই আনকোরা। তাছাড়া জঙ্গিরা পাহাড়ের উপরে গুহায় লুকিয়ে রয়েছে। ফলে নিরাপত্তা বাহিনীর যাবতীয় গতিবিধির উপরে তারা উপর থেকে নজর রাখতে পারছে। সরু পথ ও লুকানোর কোনও জায়গা না থাকার কারণেই বুধবার ভোরে জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হন দুই জওয়ান ও এক পুলিশ কর্মী।
এছাড়াও জঙ্গিদের আরও একটি বড় সুবিধা হল, মজুত থাকা বিপুল অস্ত্র ভাণ্ডার। সেনা সূত্রে খবর, গাদোলের জঙ্গলে যে কয়েকজন জঙ্গি লুকিয়ে রয়েছে, তারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তাদের কাছে রয়েছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র ও খাবার। ফলে ১০০ ঘণ্টা কেটে গেলেও তারা লড়াই থামায়নি। প্রাথমিকভাবে ওই গুহায় ২-৩ জন জঙ্গি লুকিয়ে রয়েছে বলে মনে করলেও, বর্তমানে সেনার অনুমান, আরও বেশি সংখ্যক জঙ্গি উপস্থিত থাকতে পারে। লুকিয়ে থাকা জঙ্গিদের মধ্যে রয়েছে সম্প্রতি লস্কর-ই-তৈবা সংগঠনে যোগ দেওয়া উজ়ইর খান। স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ায় উজইর জঙ্গলের প্রতিটি কোণা সম্পর্কে পরিচিত। ফলে বাকি জঙ্গিদেরও গা ঢাকা দিতে সুবিধা হচ্ছে।
জঙ্গি দমন অভিযানে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারী বৃষ্টিও। শনিবার সকাল থেকে ভারী বৃষ্টির কারণে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান চালাতে যথেষ্ট সমস্যা হচ্ছে বলেই জানা গিয়েছে।
বর্তমানে জঙ্গিদের ধরতে ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোন, রকেট লঞ্চার, মর্টার শেল ও আইইডি বিস্ফোরক। জঙ্গিরা আর বেশিক্ষণ লড়াই চালাতে পারবে না বলেই অনুমান নিরাপত্তা বাহিনীর।