রাঁচি: একবার, দু-বার নয়, ৭ বার ইডির হাজিরা এড়িয়েছেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন (Hemant Soren)। এবার তাঁর সরকারের সমস্ত দফতরকে কড়া নির্দেশিকা দিলেন তিনি। কেন্দ্রীয় এজেন্সির কোনও প্রশ্নের জবাব না দেওয়ার ব্যাপারে সমস্ত দফতরের কর্মী ও আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি, কেন্দ্রীয় এজেন্সি চাইলেও কোনও নথি তাদের হাতে না দেওয়ার ব্যাপারে কড়া নির্দেশিকা জারি করেছেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী। এই বিষয়ে কোনও দফতরের কোনও প্রশ্ন থাকলে বা কোনও রিপোর্ট দেওয়ার থাকলে মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয় বা ভিজিল্যান্স বিভাগকে জানাতে বলা হয়েছে। সবমিলিয়ে, কেন্দ্রীয় এজেন্সি তথা কেন্দ্রের সঙ্গে সোরেনের বিরোধ প্রকট হয়ে উঠেছে।
কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে তথ্য বা জবাব দেওয়ার ব্যাপারে ঝাড়খণ্ড সরকারের এই পদক্ষেপ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানান প্রশ্ন উঠছে। ঝাড়খণ্ড সরকারের এই নির্দেশিকা আদতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট, সিবিআই এবং আয়কর বিভাগের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির সঙ্গে অসহযোগিতার পরিচায়ক বলে মনে করছেন অনেকে। যদিও হেমন্ত সোরেন সরকারের দাবি, অসম্পূর্ণ তথ্য হস্তান্তর না করার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য এই নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। এপ্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি বন্দনা দাদেল জানান, মঙ্গলবার সমস্ত দফতরের কাছে একটি গোপনীয় চিঠিতে বলা হয়েছে যে, আধিকারিকদের কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির কোনও তদন্ত সম্পর্কিত নথিগুলির জন্য নোটিস এবং আপিলের সরাসরি জবাব দেওয়া উচিত নয়, কিছু বলার থাকলে মন্ত্রিপরিষদের সচিবালয়ে জানানো উচিত। তিনি আরও জানান, বিভাগীয় কর্মী বা আধিকারিকদের দেওয়া তথ্যগুলি অসম্পূর্ণ বা ভুল হতে পারে, যা বিভ্রান্তি তৈরি করবে এবং রাজ্য সরকারের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির তদন্তের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। তাই কেন্দ্রীয় এজেন্সির সঙ্গে কথা বলবে মন্ত্রিসভার সচিবালয় অথবা নোডাল বিভাগের প্রধান।
প্রসঙ্গত, জমি কেনা-বেচা নিয়ে আর্থিক তছরুপের অভিযোগে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তথা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (JMM) প্রধান হেমন্ত সোরেনকে তলব করেছিল ইডি। গত অগস্ট থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ৭ বার তাঁকে তলব করা হয়েছে। এই মামলায় ইতিমধ্যে এক আইএএস আধিকারিক-সহ ১১ জনকে গ্রেফতারও করেছে ইডি। এর মধ্যে ইডি সমনের প্রেক্ষিতে রক্ষাকবচ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টেরও দ্বারস্থ হন হেমন্ত সোরেন। যদিও শীর্ষ আদালত এই বিষয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানানোর কথা বলেন। তারপর হাইকোর্টে আবেদন জানানো হলে সোরেনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। এদিকে, পরপর ইডি সমন এড়িয়ে গিয়েছেন হেমন্ত সোরেন।