রাঁচি : ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় অগ্নি পরীক্ষায় পাস করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা জেএমএম নেতা হেমন্ত সোরেন। হেমন্তের বিধায়ক পদ খারিজ নিয়ে সংশয়ের মাঝেই সোমবার আস্থা ভোটের ডাক দেওয়া হয়। ঝাড়খণ্ড বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে সেই আস্থা ভোটে নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করলেন সোরেন। ৮১ টি আসন সমন্বিত ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় শাসক দল পেয়েছে ৪৮ টি ভোট। এদিকে বিধানসভায় অধিবেশনের সময় প্রতিবাদ করতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। আস্থা ভোটের আগেই কক্ষ ত্যাগ করেন তাঁরা। এই আস্থা ভোট বয়কট করে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি ও আজসু। ‘বিরোধী শূন্য’ বিধানসভায় আস্থা ভোটে সহজ জয় আসে জেএমএম-কংগ্রেস-আরজেডি সরকারের।
গত মাসের শেষ দিক থেকেই টানাপোড়েনের সূত্রপাত। ঝাড়খণ্ডের অবৈধ খনি মামলায় নাম জড়িয়েছে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্তের। বিজেপি তারঁ বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে, মুখ্যমন্ত্রী হয়ে নিজের নামে খনি ইজারা দেওয়ায় নির্বাচন বিধি ভঙ্গ করেছেন তিনি। রাজনৈতিক মহলে কান পাতলে শোনা যায়, সেই মর্মে হেমন্ত সোরেনের বিধায়ক পদ খারিজ করা নিয়ে একটি নোটিস পাঠানো হয়েছে ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল রমেশ বেইসের কাছে। তবে এই বিষয়ে রাজ্য়পালের তরফে এখনও কোনও ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু যেকোনও সময়ই হেমন্তের বিধায়ক পদ খারিজ হতে পারে বলে জানা গিয়েছিল। এই মুহূর্তে নিজের মুখ্যমন্ত্রীর গদি টলমল হেমন্তের। সেই পরিস্থিতিতে ঝাড়খণ্ডের জোট সরকার পড়ে যাওয়ার একটি সম্ভাবনা দেখা দেয়। হেমন্ত অভিযোগ করেন, বিজেপি তাঁর জোট সরকার ফেলে দেওয়ার কৌশল করছে। জেএমএম ও কংগ্রেস বিধায়কদের ভাঙিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগও শোনা যায় তাঁর কণ্ঠে। এই সম্ভাবনার মাঝেই বিধায়ক কেনাবেচা এড়াতে বিজেপির নাগাল থেকে দূরে নিয়ে যাওয়া হয় বিধায়কদের। প্রথমে রাঁচির একটি গেস্ট হাইসে। তারপর সেখান থেকে ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরে। এই পুরো সময়কালে হেমন্ত সোরেন একাধিকবার বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যে, বিজেপি বিধায়ক ভাঙিয়ে সরকার ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই আবহে গতকাল রাতেই রায়পুর থেকে বিধায়কদের ঝাড়খণ্ডে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়। আস্থা ভোটের আগে রাতেই বিধায়কদের সঙ্গে করেন বৈঠক।আজ সোমবার ঝাড়খণ্ড বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে আস্থা ভোটে জয় পান হেমন্ত সোরেন। ৮১ টি আসন সমন্বিত ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় ৪৮ টি ভোট পেয়েছেন হেমন্ত সোরেন।
এদিকে আস্থা ভোটের আগে বিধানসভাতেও বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে ছাড়েননি হেমন্ত। তিনি বিধানসভাতেই বলেন, ‘বিরোধীরা গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। বিজেপি ঘোড়া কেনাবেচার চেষ্টা করেছে। আমরা কক্ষে নিজেদের ক্ষমতা প্রমাণ করব।’ তিনি বিজেপিকে তোপ দেগে বলেন, ‘আমরা শুনেছি মানুষ জামা-কাপড়, রেশন, মুদি কেনেন। কিন্তু কেবলমাত্র বিজেপিই বিধায়ক কিনে বেড়ায়।’ সোরেনের দাবি মতো বিজেপির বিধায়ক কেনাবেচা এড়িয়ে আস্থা ভোটে জয় পেলেও হেমন্তের ভবিষ্যত নিয়ে কাটছে না সংশয়। তাঁর বিধায়ক পদের কী হবে তা সময় আসলেই টের পাওয়া যাবে।