নয়া দিল্লি: বিগত কয়েক বছর ধরেই ভারত-চিন (India-China) দ্বৈরথ চলছে। এই আবহে সরকারিভাবে চিন প্রজাতন্ত্রের অধীনস্থ স্বশাসিত তাইওয়ানের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে চলেছে ভারত। তাইওয়ানে ভারতীয়দের জন্য বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ আসতে চলেছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে প্রায় ১ লক্ষ ভারতীয় (Indians) তাইওয়ানে (Taiwan) চাকরির সুযোগ পাবেন। আগামী মাসেই ভারতীয় কর্মীদের তাইওয়ানে পাঠানো হতে পারে। একথা জানিয়েছেন খোদ বিদেশ মন্ত্রকের (MEA) মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, তাইওয়ানে সম্ভবত প্রায় ১ লক্ষ ভারতীয় কর্মীকে বিভিন্ন ক্ষেত্রের চাকরির জন্য পাঠানো হতে পারে। হাসপাতাল, ফার্ম এবং ফ্যাক্টরিতে ভারতীয়দের নিয়োগ হতে পারে। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী মাসেই এই বিষয়ে তাইওয়ানের সঙ্গে ভারতের চুক্তি সম্পন্ন হতে পারে। সেটা সম্পন্ন হলেই প্রাথমিকভাবে আগামী মাসে ১ লক্ষ ভারতীয় কর্মীকে তাইওয়ানে পাঠানো হতে পারে।
তাইওয়ানে মূলত প্রবীণ নাগরিকের সংখ্যা বেশি। অন্যদিকে, বিশ্বের মধ্যে সর্বাধিক যুব নাগরিক রয়েছে ভারতে। ২০২৫ সালের মধ্যে তাইওয়ান ‘সুপার এজড’ তকমা দেওয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কেননা সেখানে মোট জনসংখ্যার এক পঞ্চমাংশেরও বেশি বয়স্ক মানুষ। যদিও ভারত-তাইওয়ান চুক্তি নিয়ে ইতিমধ্যে তাইওয়ানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বেজিং। যদিও সেই হুঁশিয়ারিতে তাইওয়াং বিশেষ কর্ণপাত করছে না বলে সূত্রের খবর। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, “ভারত-তাওয়ানের মধ্যে নিয়োগ-চুক্তির বিষয়টি বিবেচনার পর্যায়ে রয়েছে।” তাইওয়ানের তরফে অবশ্য এবিষয়ে এখনও কিছু জানানো হয়নি।
ব্লুমবার্গের রিপোর্ট উল্লেখ করে এক সরকারি আধিকারিক জানান, কর্মসংস্থানের বিষয়ে ১৩টি দেশের সঙ্গে ভারতের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ১৩টি দেশের মধ্যে জাপান, ফ্রান্স, ব্রিটেনও রয়েছে। এছাড়া নেদারল্যান্ড, গ্রিস, ডেনমার্ক এবং সুইৎজারল্যান্ডের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে।
২০২০ সালের মে মাসে পূর্ব লাদাখ সীমান্তে অতর্কিতে হামলা চালায় চিনা ফৌজ। পাল্টা ভারতীয় জওয়ানরাও হামলা চালায়। তারপর থেকেই লাদাখ সীমান্তে উত্তেজনা ছড়ায়। দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক স্তরে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। কিন্তু, এখনও দুই দেশের মধ্যে চাপা দ্বন্দ্ব রয়েছে। অন্যদিকে, তাইওয়ানের সঙ্গে চিনেরও বিবাদ বিদ্যমান। কেননা দীর্ঘদিন ধরে তাইওয়ানকে নিজেদের জায়গা বলে দাবি জানাচ্ছে বেজিং। পাশাপাশি চিনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে, এমন দেশগুলিকে তাইওয়ানের সঙ্গে কোনও চুক্তিতে না যাওয়ার কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছে বেজিং। এই আবহে তাইওয়ানের সঙ্গে নয়া দিল্লির নিয়োগ চুক্তি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।