উদুপি: ফের কর্নাটকে (Karnataka) মাথাচাড়া দিল হিজাব বিতর্ক (HIijab Row)। হিজাব পড়ে যাওয়ায় স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হল না দুই পড়ুয়াকে। কর্নাটকে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা চলছে। এদিন সকালে ওই দুই পড়ুয়া বুরখা পরে পরীক্ষা দিতে আসে, তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে তাদের বাধা দেওয়া হয়। এরপরই তাদের পরীক্ষা হল থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, ওই দুই পড়ুয়াই প্রথম ক্লাসরুমে হিজাব পরে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আর্জি জানিয়েছিলেন কর্নাটক হাইকোর্টে (Karnataka High Court)। তবে আদালতের তরফে শেষ অবধি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় পোশাক পড়ে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞাই জারি করা হয়।
আলিয়া আসাদ ও রেশম নামক ওই দুই পড়ুয়া এদিন সকালে উদুপির বিদোদয়া পিইউ কলেজে পরীক্ষা দিতে উপস্থিত হয়। পরীক্ষা হলে ঢোকার জন্য তারা হল টিকিটও সংগ্রহ করে। কিন্তু বুরখা পরে থাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে তাদের বাধা দেওয়া হয়। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে কলেজের প্রিন্সিপালের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। কিন্তু কর্নাটক হাইকোর্টের তরফে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় পোশাক পরার উপর নিষেধাজ্ঞার রায়কেই উল্লেখ করে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায় যে, পরীক্ষা দিতে হলে বুরখা ছাড়াই ঢুকতে হবে। ওই দুই ছাত্রী সেই নির্দেশ মানতে রাজি না হলে, তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, এর আগে তারা প্রাকটিক্যাল পরীক্ষাও দিতে পারেননি হিজাব পরার জন্য।
আজ থেকেই কর্নাটকের প্রি-ইউনিভার্সিটির দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা শুরু হয়েছে। শিক্ষা দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, মোট ৬ লক্ষ ৮৪ হাজার ২৫৫ জন পরীক্ষা দিচ্ছে। রাজ্যজুড়ে মোট ১০৭৬ টি কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হবে। অশান্তির আশঙ্কায় আগে থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।
সম্প্রতিই রাজ্যের একাধিক মুসলিম পড়ুয়া রাজ্য শিক্ষা মন্ত্রী বিসি নাগেশের কাছে আবেদন করেছিলেন যে তাদের যেন হিজাব পরে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়। তবে শিক্ষামন্ত্রী সাফ জানিয়েছেন যে, হিজাব পরে যে সমস্ত পড়ুয়ারা আসবে, তাদের পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকেই কর্নাটকে হিজাব বিতর্ক শুরু হয়েছিল। রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে হিজাব পরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করাকে কেন্দ্র করেই বিক্ষোভ শুরু হয়। জল গড়ায় কর্নাটক হাইকোর্ট অবধি। গত ১৫ মার্চ আদালতের তরফে রাজ্য সরকারের নির্দেশিকাই কার্যকর রাখা হয়, যেখানে বলা হয়েছিল যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনও ধরনের ধর্মীয় পোশাক পরে প্রবেশ করা যাবে না। সুপ্রিম কোর্টে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আবেদন জানানো হলেও, সেই মামলা খারিজ করে দেওয়া হয়।
গত সপ্তাহেই আলিয়া আসাদি নামক ওই পড়ুয়া মুখ্য়মন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ে কাছে ফের একবার আর্জি জানিয়েছিলেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় পোশাকের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার। তাঁর দাবি ছিল, হিজাবের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করায় দ্বাদশ শ্রেণির বহু পড়ুয়াই প্রভাবিত হবে।