Kashmiri Pandit Killed: অফিসে ঢুকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে গুলি কাশ্মীরি পণ্ডিত’কে
Kashmiri Pandit Killed: বৃহস্পতিবার বিকালে, জম্মু ও কাশ্মীরের বুদগাম জেলায় রাহুল ভাট নামে এক কাশ্মীরি পণ্ডিত সম্প্রদায়ের ব্যক্তিকে, সরকারি অফিসে ঢুকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে হত্যা করল বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিরা।

শ্রীনগর: একেবারে সরকারি অফিসে ঢুকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি। ফের জম্মু ও কাশ্মীরে ফের জঙ্গিদের নিশানায় সংখ্যালঘু পণ্ডিত সম্প্রদায়। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার বিকালে, বুদগাম জেলার চাদুরা এলাকায়। উপত্যকার পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ব্যক্তি রাজস্ব বিভাগের কর্মী, নাম রাহুল ভাট। জঙ্গিদের গুলিতে তিনি গুরুতর জখম হন। তাঁকে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও, শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি। কাশ্মীর জোন পুলিশের পক্ষ থেকে টুইট করে জানানো হয়েছে, হামলাকারী জঙ্গিরা সংখ্যায় দুজন ছিল। এদিন বিকালে সশস্ত্র অবস্থায় চাদুরার তহসিলদার অফিসে হানা দিয়েছিল তারা। রাহুল ভাটকে গুলি করে তারা পালিয়ে যায়। ঘটনার পরই নিরাপত্তা কর্মীরা হামলাকারীদের সন্ধানে জায়গায় জায়গায় তল্লাশি শুরু করেছে।
গত আট মাসে বারংবার জঙ্গিরা নিশানা করেছে উপত্যকায় কর্মরত পরিযায়ী শ্রমিক ও কাশ্মীরি সংখ্যালঘু পণ্ডিত সম্প্রদায়কে। এই ঘটনা সেই ধারাবাহিকতারই অংশ বলে মনে করছে নিরাপত্তা বাহিনী। এই হত্যা শুরু হয়েছিল গত বছরের অক্টোবর মাসে। শুধু অক্টোবর মাসেই ৭ দিনের মধ্যে জঙ্গিদের হাতে প্রাণ গিয়েছিল ৫ ব্যক্তির। তাঁরা সকলেই ছিলেন কাশ্মীরি পণ্ডিত, শিখ কিংবা অন্য রাজ্য থেকে আসা হিন্দু।
নিহতদের মধ্যে ছিলেন শ্রীনগরের বিখ্যাত ওষুধের দোকানের মালিক, মাখনলাল বিন্দ্রু। কাশ্মীরের পণ্ডিত সম্প্রদায়ের অন্যতম মুখ ছিলেন তিনি। খুন হয়েছিলেন বীরেন্দর পাসওয়ান নামে এক ছোট ব্যবসায়ী, সরকারি স্কুলের অধ্যক্ষ সুপিন্দর কওর। গত মাসেও দক্ষিণ কাশ্মীরের শোপিয়ান জেলার ছোটোগাম এলাকায়, মোটরবাইকে করে এসে এক দোকানদারকে গুলি করেছিল দুই জঙ্গি। ওই দোকানদারও ছিলেন কাশ্মীরি পণ্ডিত সম্প্রদায়ের, নাম সোনু কুমার। তিনি অবশ্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন।
জঙ্গিরা পর পর এইভাবে বেছে বেছে কাশ্মীরি সংখ্য়ালঘুদের নিশানা করায়, নব্বইয়ের দশকের পর ফের একবার তীব্র আতঙ্ক তৈরি হয়েছে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের মনে। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত বদগাম দেলার শেখপাড়া। পণ্ডিত সম্প্রদায়ের অধিকাংশই এই এলাকার বাসিন্দা। কিন্তু, জঙ্গি ভয়ে বর্তমানে শেখপাড়া এখন প্রায় ভুতের শহরে পরিণত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। নব্বইয়ের দশকের গোড়ার পর, ধীরে ধীরে আরও একবার ভিটেমাটি ছাড়ছেন পণ্ডিত সম্প্রদায়ের মানুষরা।
বস্তুত, ৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকেই কাশ্মীরে ফের বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের দাপট বাড়ছে। নিরাপত্তা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে উপত্যকায় অন্তত ১৬৮ জন জঙ্গি সক্রিয় রয়েছে। চলতি বছরেই নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছে আরও ৭৫ জনের। তাদের মধ্যে ২১ জন ছিল পাকিস্তানের নাগরিক।
৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকে, উপত্যকার প্রশাসনিক ক্ষমতা রয়েছে কেন্দ্রেরই হাতে। পণ্ডিত সম্প্রদায়ের একের পর এক ব্যক্তির হত্যা নিয়ে কেন্দ্রকেই কোনঠাসা করতে চাইছে বিরোধীরা। কংগ্রেস, ন্যাশনাসল কনফারেন্স-এর মতো বিরোধী দলগুলির দাবি, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ব্যর্থ মোদী সরকার। এদিনের হত্যারও তীব্র নিন্দা করেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা। ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই হত্যার ঘটনায় তিনি অত্যন্ত ব্যথিত বলে জানিয়েছেন আবদুল্লা। তিনি আরও বলেছেন, ‘কাশ্মীর উপত্যকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হলেও, সরকারে পক্ষ থেকে কাশ্মীরের একটা ভুয়ো ছবি তুলে ধরা হচ্ছে।’