লখনউ: অবশেষে জেল থেকে বেরলেন কেরলের সাংবাদিক সিদ্দিকি কাপ্পান। দু’বছরেরও বেশি সময় জেলবন্দি থাকার পর মুক্তি পেলেন তিনি। আদালতে এক মাস আগেই তাঁকে জামিন দিয়েছিল। দু’টি মামলায় এক মাস আগে জামিন পেলেও জেল থেকে বেরতে পারেননি তিনি। অবশেষে লখনউয়ের জেল থেকে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হল। ২০২০ সালে উত্তর প্রদেশে একটি ধর্ষণের অভিযোগে উত্তাল হয়েছিল দেশ। সেই ঘটনার রিপোর্ট করতে উত্তর প্রদেশে এসেছিলেন কাপ্পান। সে সময়ই পরিস্থিতি অস্থির করে তোলার অভিযোগ কাপ্পানের বিরুদ্ধে আনে উত্তর প্রদেশের সরকার। এবং দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়ের হয় তাঁর বিরুদ্ধে। গ্রেফতার হন তিনি। তখনই থেকেই উত্তর প্রদেশে জেলবন্দি ছিলেন কেরলের ওই সাংবাদিক। অবেশেষে জেল থেকে বেরলেন তিনি।
লখনউয়ের জেল থেকে বেরনোর পর উত্তর প্রদেশ সরকারের উপর ক্ষোভ উগরে তিনি বলেছেন, “কঠোর এই আইনের বিরুদ্ধে আমি লড়াই চালিয়ে যাব। ২৮ মাসের দীর্ঘ লড়াইয়ের পর আমি জামিন পাওয়া সত্ত্বেও তাঁরা আমাকে জেলবন্দি করে রেখেছিল। আমি বুঝতে পারলাম না, আমাকে জেলে রেখে কার কী লাভ হল। এই দুবছর খুব কঠিন ছিল। কিন্তু আমি ভয় পায়নি।”
২০২০ সালের অক্টোবরে দলিত যুবতীকে গণধর্ষণের অভিযোগে উত্তাল হয়েছিল উত্তর প্রদেশের হাথরস। হাথরসের গ্রামের উচ্চবর্ণের কয়েক জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। নির্যাতিতার মৃত্যুর পর তড়িঘড়ি তাঁর দেহ সৎকার নিয়েও অভিযোগ উঠেছিল হাথরসের জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনা ঘিরে উত্তাল হয়েছিল দেশ। দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা ভিড় জমিয়েছিলেন হাথরসের ওই গ্রামে। তাঁদের বাধা দেওয়ার অভিযোগও ওঠে সেখাকার প্রশাসনের বিরুদ্ধে। হাথরস যাওয়ার পথেই গ্রেফতার করা হয়েছিল কেরলের ওই সাংবাদিককে। দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। ইউএপিএ আইনের মামলা দায়ের হয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে। পিপল ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া নামের নিষিদ্ধ সংগঠনের থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগও কাপ্পানের বিরুদ্ধে উঠেছিল। যদিও এই সাংবাদিকের গ্রেফতার নিয়ে উত্তর প্রদেশ সরকারের সমালোচনা করেছিল বিরোধী-সহ দেশের বিভিন্ন মহল।