TV9 বাংলা ডিজিটাল: তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, অন্ধ্র প্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, মহারাষ্ট্রের পর এবার কেরল। কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের তদন্তে ‘আগাম সম্মতি’ (general consent) প্রত্যাহার করল পিনারাই বিজয়নের সরকার। এবার রাজ্য অনুমতি দিলে তবেই মামলার তদন্ত করতে পারবে সিবিআই (CBI)।
১৯৪৬ সালের ‘দিল্লি স্পেশাল পুলিস এস্টাব্লিশমেন্ট’ আইনের ছয় নম্বর ধারা অনুযায়ী সিবিআইকে কোনও মামলা নিজের হাতে তুলে নিতে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের ‘আগাম সম্মতির’ প্রয়োজন হত। সেই সম্মতি দিয়ে রাখলে খেয়ালখুশি তদন্ত করার অধিকার পায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারীর সংস্থাগুলি। কেরল ছাড়াও আর ৫ অবিজেপি শাসতি রাজ্য সম্মতি তুলে নেওয়ার পথে হাঁটল। গত সপ্তাহেই সিপিআই(এম) ও সিপিআই (CPI)রাজ্য সরকারের কাছে সিবিআইয়ের এই অধিকার প্রত্যাহারের আবেদন জানায়। সেই আবেদন অনুযায়ীই বুধবার সরকারের তরফ থেকে এই ঘোষণা করা হয়।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের পিছনে সিবিআইয়ের বিভিন্ন তদন্তকে নিজের হাতে তুলে নেওয়ার ঘটনাকেই কারণ হিসাবে মনে করছেন অনেকে। সম্প্রতি কেরলে সোনা পাচারকাণ্ডের (Gold Smuggling case) মূল অভিযুক্ত স্বপ্না সুরেশ (Sapna Suresh) জেরায় জানায়, রাজ্যের জীবন মিশন প্রকল্পের (Life Mission Project) অধীনে ২০ কোটির একটি আবাসন নির্মাণ প্রকল্প থেকে ৪.২৫ কোটি টাকা নিজের পকেটস্থ করেছিল। এরপরই ওই আবাসন প্রকল্প সম্পর্কিত তদন্তভার নিজের হাতে তুলে নেয় সিবিআই।
কংগ্রেস সাংসদ অনিল আক্কারা, যার নির্বাচন কেন্দ্র ভেদাক্কানচেরী (Vedakkanchery)-তে এই আবাসন তৈরি হচ্ছিল, তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্তভার তুলে নেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এই ঘটনায় কেরলের আইনমন্ত্রী এ কে বালান জানান, নিজের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে সিবিআই জীবন মিশন প্রকল্পের তদন্ত শুরু করেছে। এছাড়াও সোনা পাচারকাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর প্রাক্তন মুখ্যসচিব এম শিবশঙ্করের গ্রেফতার এবং মাদক সংক্রান্ত আর্থিক নয়ছয়কাণ্ডে সিপিআই(এম)-র রাজ্য সম্পাদক কোদিয়ারি বালাকৃষ্ণণের ছেলে বিনেশের গ্রেফতারিতে বিপাকে পড়েছে শাসক দল।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারীর ‘আগাম সম্মতি’ কেড়ে নেওয়ার বিষয়ে কেরলের বিজেপি সভাপতি কে সুরেন্দ্রণ বলেন,”কেরলে সিবিআইয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে কারণ সিপিআই(এম) ভয় পাচ্ছে যে সোনা পাচার কাণ্ডে ও জীবন মিশন প্রকল্পের তদন্ত মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের (Pinarayi Vijayan) দোরগোড়ায় গিয়ে পৌঁছাবে। সোনা পাচারকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত মুখ্যমন্ত্রীর একসময়ের বিশ্বস্ত সঙ্গী শিবশঙ্কর। সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক ও তার ছেলেও বড়ো অভিযোগের মুখে পড়েছে। সিবিআই যে কেরল থেকে পাততাড়ি গোটাবে, একথা ভাববেন না। সিপিআই(এম)-র বোঝা উচিত কেন্দ্র কংগ্রেস শাসিত নয়।”
অন্যদিকে সোনা পাচারকাণ্ডে বুধবার কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর অতিরিক্ত সচিব সি এম রবীন্দ্রনকে সমন পাঠাল ইডি। তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে আজ কোচির আদালতে রিপোর্ট জমা করা হবে বলেও জানায় তদন্তকারী সংস্থা।