কোল্লাম: নিট পরীক্ষাকেন্দ্রে ছাত্রীদের জোর করে অন্তর্বাস খোলানো নিয়ে সরগরম কেরল। পরীক্ষাহলে ঢোকার আগে ছাত্রীদের জোর করে অন্তর্বাস খোলানো হয়েছে, এই তথ্য সামনে আসতেই ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। যে সমস্ত ছাত্রীরা এই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছেন, তাদের মধ্যেই একজন মুখ খুললেন। জানালেন, ঠিক কী কী ঘটেছিল সেইদিন।
রবিবার ছিল মেডিক্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষা, যা নিট নামে পরিচিত। দেশজুড়ে এই পরীক্ষার ব্যবস্থা করার দায়িত্বে ছিল ন্যাশনাল টেস্চিং এজেন্সি বা এনটিএ। দেশের বাকি অংশে শান্তিপূর্ণভাবেই সেই পরীক্ষা শেষ হলেও, বিতর্ক তৈরি হয় কেরলের একটি পরীক্ষাকেন্দ্রকে ঘিরে, কোল্লামের ওই পরীক্ষাকেন্দ্রে আগত ছাত্রীদের অন্তর্বাস খুলে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার নির্দেশ দেওয়া হয়। এক ছাত্রীর বাবা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করতেই গোটা দেশে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় শুরু হয়।
১৭ বছরের এক ছাত্রী, যিনি রবিবার ওই কেন্দ্রেই পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন, তিনি জানান, গোটা ঘটনাটিই অত্যন্ত অপমানজনক ছিল। পরীক্ষা হলে ঢোকার আগে জোর করে অন্তর্বাস খোলানোয়, পরীক্ষা চলাকালীন সর্বক্ষণ তাঁকে চুল দিয়ে বুক ঢেকে রাখতে হয়। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ওই ছাত্রী বলেন, “পরীক্ষা শুরুর আগে ওনারা আমায় ডাকেন এবং বলেন যে সমস্ত পরীক্ষার্থীর স্ক্যানিং হবে। আমরা ভেবেছিলাম দুটো লাইনে দাঁড় করানো হচ্ছে, এবার চেকিংয়ের পরই হয়তো যেতে দেওয়া হবে। কিন্তু ওনারা বলেন যারা ধাতব হুকের ব্রা পরে রয়েছে, তাদের সকলকেই ব্রা খুলতে হবে। আমাকেও প্রশ্ন করা হয় যে অন্তর্বাসে ধাতব হুক আছে কি না, হ্য়াঁ বলতেই আমায় একটি লাইনে দাঁড়াতে বলে।”
ওই ছাত্রী আরও বলেন, “ওনারা আমাদের অন্তর্বাস খুলে টেবিলের উপরে রাখতে বলেন। সমস্ত ছাত্রীদের ব্রা এক জায়গায় জড়ো করে রাখা হয়। আমরা তখনও জানতাম না যে পরীক্ষার পর আর অন্তর্বাস ফেরত দেওয়া হবে কি না। পরীক্ষা শেষে যখন ওই ঘরে যাই, সেখানে প্রচন্ড ভিড় ছিল। কোনওমতে নিজের অন্তর্বাস খুঁজে নিয়ে আমি বেরিয়ে আসি।”
গোটা ঘটনায় বিব্রত হয়ে বেশ কিছু ছাত্রী কান্নায় ভেঙে পড়েন। তখন নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের প্রশ্ন করেন যে কী হয়েছে। গোটা বিষয়টি জানার পরও তাদের কেবল ব্রা সংগ্রহ করে চলে যেতে বলা হয়, পরার সময়টুকুও দেওয়া হয়নি। ওই ছাত্রী বলেন, “ওনারা আমাদের বলেন যে হাতে ব্রা নাও আর বেরিয়ে যাও। পরার কোনও দরকার নেই। আমরা এই কথা শুনে ভীষণ অস্বস্তিবোধ করি। কিন্তু কেউই বেরিয়ে যায়নি। সকলে সঠিকভাবে জামা পরে তারপরই পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে বেরোই। গোটা জায়গা অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল, জামা বদলানোর আলাদা কোনও জায়গাও ছিল না। অত্যন্ত ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা ছিল। পরীক্ষা হলেও আমরা বাধ্য হয়ে চুল সামনে দিয়ে রেখেছিলাম, কারণ কারোর কাছে শাল বা ওড়না ছিল না। ছেলেদের পাশে বসেই আমরা পরীক্ষা দিই। গোটা ঘটনা ভীষণ অস্বস্তিজনক ছিল।”