নয়া দিল্লি: অবশেষে স্বস্তি মিলল যাদব পরিবারের। জমির বদলে চাকরির দুর্নীতি মামলায় জামিন পেলেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্য়মন্ত্রী তথা প্রাক্তন রেলমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদব (Lalu Prasad Yadav)। বুধবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতের (Delhi Rouse Avenue Court) তরফে লালুর পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী তথা বিহারের অপর প্রাক্তন মুখ্য়মন্ত্রী রাবড়ি দেবী (Rabri Devi) ও তাদের কন্যা মিশা ভারতী(Misha Bharati)-কেও জামিন দেওয়া হয়। ৫০ হাজার টাকা ব্যক্তিগত বন্ডে তাদের জামিন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিহারে জমির বদলে চাকরির দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমেছে ইডি ও সিবিআই। গত মাসেই সিবিআই দিল্লির আদালতে চার্জশিট পেশ করে। সেখানে বিহারের প্রাক্তন মুখ্য়মন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদব, তাঁর স্ত্রী রাবড়ি দেবী সহ মোট ১৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। তবে তাদের গ্রেফতারির দাবি জানানো হয়নি চার্জশিটে।
এ দিন সকালে দিল্লি আদালতে হাজিরা দিতে আসেন লালু প্রসাদ যাদব, স্ত্রী রাবড়ি দেবী ও কন্যা মিশা ভারতী। প্রবীণ আরজেডি নেতাকে হুইলচেয়ারে বসে আদালতে আসতে দেখা যায়। মামলার শুনানি শুরু হলে রাউস অ্যাভিনিউ আদালতের তরফে লালু প্রসাদ যাদব, রাবড়ি দেবী ও মিশা ভারতীকে জামিন দেওয়া হয়। আদালতের তরফে ৫০ হাজার টাকা ব্যক্তিগত বন্ডে জামিনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, আগামিদিনে যদি জমির বদলে চাকরির দুর্নীতি মামলায় বিহারের প্রাক্তন মুখ্য়মন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবকে আদালতে হাজিরা দিতে বলা হলে তিনি আর হাজিরা দেবেন কি না, তা স্থির করবেন চিকিৎসকরা। তাঁর শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়েই ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে হাজিরা দেওয়ার আবেদন জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহেই জমির বিনিময়ে চাকরির দুর্নীতি মামলায় লালু প্রসাদ যাদবকে দুই ঘণ্টা জেরা করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর পরের দিনই রাবড়ি দেবীর পটনার বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। তল্লাশি অভিযানের পাশাপাশি তাঁর বয়ানও রেকর্ড করা হয়। একইদিনে লালু কন্যা মিশা ভারতীর বাড়িতেও তল্লাশি অভিযান চালানো হয়।
সিবিআইয়ের পাশাপাশি ইডিও এই মামলার তদন্ত করছে। সম্প্রতিই লালু পুত্র তথা বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের দিল্লির বাড়িতেও হানা দেয় ইডি। তল্লাশি অভিযানের পরের দিনই সিবিআই একই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তেজস্বী যাদবকে ডেকে পাঠায়। যদিও স্ত্রীর অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে হাজিরা এড়িয়ে যান তেজস্বী।
প্রসঙ্গত, রেলমন্ত্রী থাকাকালীন লালু প্রসাদ যাদব রেলে চাকরি দেওয়ার বিনিময়ে বিহারের একাধিক জমি নিজের ও পরিবারের নামে করে নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সম্প্রতিই সিবিআই চার্জশিটে বলা হয়, ২০০৪ সাল থেকে ২০০৯ সাল অবধি রেলে চাকরির বদলে কম মূল্য়ে বা বিনামূল্যেই জমি দেওয়া হয়েছিল। ভারতীয় রেলওয়ের নিয়োগের নিয়ম না মেনেই এই নিয়োগ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, জমির বিনিময়ে চাকরির দুর্নীতিতে সরাসরি যুক্ত ছিলেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদব ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।