High Court: ইনিই ‘আদর্শ ভারতীয় বধূ’, বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় স্ত্রী-কে ‘খেতাব’ হাইকোর্টের
High Court: যদিও এই সকল অভিযোগকে নস্যাৎ করেছেন স্ত্রী। পাশাপাশি, তিনি জানিয়েছেন, বিবাহিত জীবনে স্বামী কিংবা শ্বশুড়বাড়ির প্রতি কর্তব্যপালনে কখনও বিচ্যুত হননি তিনি। কিন্তু তিনি যখন বাপের বাড়িতে গিয়েছিলেন, সেই সময় স্বামী অফিসের এক সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।

ভোপাল: একজন ‘আদর্শ ভারতীয় বধূ’ কে? একটি মামলার শুনানিতে সেই উত্তরই দিল মধ্য প্রদেশ হাইকোর্ট। বিচারপতি বিবেক রুশিয়া এবং বিচারপতি বিনোদকুমার দ্বিবেদীর ডিভিশন বেঞ্চে উঠেছিল একটি বিবাহবিচ্ছেদের মামলা। নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই হাইকোর্টে দ্বারস্থ হন এক ব্যক্তি। কিন্তু কোনও লাভই হল না। উল্টে আদালতের চোখে ‘আদর্শ ভারতীয় বধূ’র খেতাব পেয়ে গেলেন ওই ব্যক্তির স্ত্রী।
ঘটনা সূত্রপাত নিম্ন আদালত থেকে। স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে পারিবারিক আদালতে দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। স্বামীর অভিযোগ, স্ত্রী তাঁকে পছন্দ করেন না। তাদের সম্পর্ক আর আগের মতো নেই। কিন্তু কেন? সেই যুক্তিও দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর দাবি, তিনি মদ্যপান করেন, অন্যান্য সম্পর্কে লিপ্ত রয়েছেন বলে তাঁর স্ত্রী তাঁকে সন্দেহ করে। যার জেরে তাদের বৈবাহিক জীবন থেকে সমস্ত অনুভূতিই যেন হারিয়ে গিয়েছে। স্বামীর আরও অভিযোগ, ২০০২ সালে স্ত্রী যখন গর্ভবতী হন, তাতে তিনি একদমই খুশি হননি। আর সন্তানের জন্মের পর নিজের বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন।
যদিও এই সকল অভিযোগকে নস্যাৎ করেছেন স্ত্রী। পাশাপাশি, তিনি জানিয়েছেন, বিবাহিত জীবনে স্বামী কিংবা শ্বশুড়বাড়ির প্রতি কর্তব্যপালনে কখনও বিচ্যুত হননি তিনি। কিন্তু তিনি যখন বাপের বাড়িতে গিয়েছিলেন, সেই সময় স্বামী অফিসের এক সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। সেই সময় থেকে স্বামীর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখলেও, এমনকি স্বামী তাঁকে পরিত্যাগের পরেও শ্বশুড়বাড়িতে থেকে গিয়ে শ্বশুড়-শাশুড়ির দেখভাল করে গিয়েছেন ওই মহিলা।
সোমবার দুই পক্ষের যুক্তি শোনে আদালত। তারপর স্বামীর দায়ের করা বিবাহবিচ্ছেদের মামলা ফের খারিজ করে হাইকোর্ট। বিচারপতি বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, “বিবাহ একটি পবিত্র ও অবিচ্ছেদ্য বন্ধন। একজন স্ত্রী স্বামীর দ্বারা পরিত্যক্ত হওয়ার পরেও তাঁর বৈবাহিক জীবনের সমস্ত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।” এরপরেই ওই মহিলাকে ‘আদর্শ ভারতীয় বধূ’ বলে অভিহিত করেন বিচারপতিরা। পাশাপাশি, গোটা মামলাটিকেই ‘নজিরবিহীন’ বলে দাবি করে আদালত।
আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, “স্বামীর চরিত্রহনন নয়। বরং, নিজের দায়িত্বই পালন করে গিয়েছেন ওই মহিলা। এই পরিস্থিতিতে কোনও মতেই মামলাকারীকে তাঁর বিবাহিত স্ত্রীর প্রতি অবহেলা ও অসম্মানজনক আচরণ করতে দেওয়া যাবে না। যখন ওনাকে স্বামী একেবারে একা করে দিয়েছিলেন, সেই সময়ই তিনি তাঁর মঙ্গলসূত্র ছিঁড়ে ফেলেননি কিংবা সিঁদুরও মুছে ফেলেননি। কারণ তাঁর কাছে বিবাহ কোনও চুক্তি নয়, একটা সংস্কার।”
