ক্লাস-১ থেকেই বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল হিন্দি! চাপের মুখে নির্দেশিকা প্রত্যাহার করল সরকার
Three Language Policy: সরকার নির্দেশিকা জারি করে বলে, মারাঠী ও ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বাধ্যতামূলক তৃতীয় ভাষা হিসাবে হিন্দি পড়াতে হবে। জাতীয় শিক্ষা নীতির অংশ এটা।

মুম্বই: চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে হিন্দি। মাতৃভাষা রক্ষা করতে বিক্ষোভ-আন্দোলনে সরব গোটা রাজ্য। চাপের মুখে পড়েই তিন ভাষা শিক্ষানীতি থেকে পিছু হটতে হল ফড়ণবীস সরকারকে। রবিবার মহারাষ্ট্র সরকার ঘোষণা করল তিন ভাষা নীতির নির্দেশিকা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। নতুন একটি কমিটি তৈরি করা হবে নয়া নীতি তৈরি ও পর্যালোচনার জন্য।
মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীসই তিন ভাষা শিক্ষানীতি ঘোষণা করেছিলেন। প্রাথমিক স্কুলে প্রথম শ্রেণি থেকেই শিশুদের হিন্দি পড়ানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। তবে বিরোধীদের লাগাতার আন্দোলনের মুখে পড়ে রবিবার সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরতে বাধ্য হয় সরকার। মুখ্যমন্ত্রী জানান, তিন ভাষা নীতির নির্দেশিকা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। ক্যাবিনেট বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ফড়ণবীস বলেন, “ক্যাবিনেট বৈঠকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে তিন ভাষা নীতি এবং তা কীভাবে কার্যকর করা উচিত, তা নিয়ে ডঃ নরেন্দ্র যাদবের অধীনে একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এই কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পরই নীতি কার্যকর করা হবে। তাই আপাতত আমরা তিন ভাষা নীতি বাতিল করছে। আমাদের কাছে মারাঠীই সবসময় অগ্রগণ্য।”
তিন ভাষা নীতি কী?
গত এপ্রিলে মহাযুতি সরকার নির্দেশিকা জারি করে বলে, মারাঠী ও ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বাধ্যতামূলক তৃতীয় ভাষা হিসাবে হিন্দি পড়াতে হবে। জাতীয় শিক্ষা নীতির অংশ এটা।
এই ঘোষণার পর থেকেই তপ্ত হয় রাজ্য রাজনীতি। শিবসেনা ইউবিটির উদ্ধব ঠাকরে থেকে শুরু করে মহানির্বাণ সেনার রাজ ঠাকরে, প্রতিবাদে সরব হন সকলে। এমনকী, দুই ভাই যারা এতদিন একে অপরের বিরোধিতা করে এসেছে, তারাও মারাঠী ভাষা সংরক্ষণ করতে একযোগে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।
চাপের মুখে পড়েই মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীস ইউ টার্ন নিয়ে বলেন, হিন্দি ভাষা বাধ্যতামূলক করা হবে না। পড়ুয়ারা চাইলে অন্য কোনও আঞ্চলিক ভাষাকে তৃতীয় ভাষা হিসাবে বাছতে পারে। সাধারণত অধিকাংশ স্কুলে হিন্দি পড়ানো হবে। যদি কোনও ক্লাসে অন্তত ২০ জন পড়ুয়া হিন্দির বদলে অন্য ভাষা বাছাই করে, তাহলে স্কুল শিক্ষক নিয়োগ করতে পারে বা অনলাইনে পড়াতে পারে সেই ভাষা। তবে তৃতীয় ভাষায় অন্য কী ভাষা বাছাই করার সুযোগ পাবে পডুয়ারা, তা নিয়ে সরকার ধোঁয়াশাই রেখে দেয়।
রাজ্য়ে এই নীতি নিয়ে বিপুল সমালোচনা এবং বিরোধী দলগুলির চাপেই শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে বাধ্য হল মহারাষ্ট্রের সরকার।

