নয়া দিল্লি: সংসদে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বক্তব্য ঘিরে তোলপাড় রাজনৈতিক মহলে। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে মহুয়ার বক্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে চাপান-উতোর। যদিও প্রাথমিকভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলে জানা গিয়েছিল, তবে এবার বিজেপি সাংসদের তরফে তাঁর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ আনা হবে বলে জানা গিয়েছে।
সংসদে মহুয়ার ওই বক্তব্যের পরই শুরু হয় বিতর্ক। পরে অবশ্য মোদী সরকার সিদ্ধান্ত নেয় যে মহুয়ার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু সেদিনের বক্তব্যের ফুটেজ মহুয়া নিজের ট্যুইটার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেন। আর তা থেকেই ফের বিতর্কের সূত্রপাত। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ পিপি চৌধরি ও আর এক বিজেপি সাংসদ নিশান্ত দুবে স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ আনার আর্জি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মেঝেতে পড়ে স্ত্রী’র নলিকাটা দেহ, সিলিং ফ্যানে ঝুলছেন স্বামী! দমদমে প্রৌঢ় দম্পতির রহস্যমৃত্যু
আগে অবশ্য কেন্দ্রের সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী মহুয়ার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলেন। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।
বুধবার নিজের টুইটারে কেন্দ্রীয় সরকারের সেই অবস্থান নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন মহুয়া। তাঁর দাবি, কৃষক বিক্ষোভের থেকে নজর ঘোরাতেই অন্য বিষয়ে এভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে বিজেপি সরকার।
গত সোমবার সংসদে মহুয়ার পক্ষ নিয়ে তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় জানান, মহুয়া মৈত্র শুধু প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি বলেছেন, কারও নাম উনি করেননি। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে কোনও মন্তব্য করা আইনত অসঙ্গত নয় বলে দাবি করেন তিনি। কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদও তাঁর অবস্থানে অনড় থাকেন। এই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার জানা গেল, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করছে না কেন্দ্র।
সোমবার বাজেট অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি ভাষণের আলোচনার সময় মহুয়া দেশের বিচার ব্যবস্থা নিয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন যে, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল। তারপর অভিযুক্ত বিচারপতির নেতৃত্বেই চলে বিচারপর্ব। এর ফলে বিচার ব্যবস্থা পবিত্রতা হারিয়েছে। তাঁর এই মন্তব্যের প্রবল বিরোধিতা করেন বিজেপি সাংসদরা। ওই মন্তব্যটি সভার কার্যবিবরণী থেকে মুছে দেওয়ার দাবি ওঠে। জানা যায়, মহুয়ার বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস আনতে চলেছে কেন্দ্র।
এদিকে ওয়াকিবহাল মহলেরও দাবি, মহুয়ার বিরুদ্ধে আইনত কোনও ব্যবস্থা নিতে পারবে না কেন্দ্র। কারণ, তৃণমূল সাংসদ বর্তমান নয়, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে সংসদে মন্তব্য করেছেন। আর প্রাক্তন বিচারপতিরা বর্তমান বিচারপতিদের মতো রক্ষাকবচ উপভোগ করেন না। তাই সোমবার তৃণমূল সাংসদ যে বিষয়ে সংসদে মন্তব্য করে হুলুস্থুলু ফেলে দিয়েছিলেন সেই প্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা কার্যত অসম্ভব।