কুয়ালালামপুর: সারা বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছে এই ছবি। ছবিটি দেখার পর আর বিস্ময় ধরে রাখতে পারছেন না কেউ। মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর শহরের আকাশ জুড়ে ঘটছে বজ্রপাত! এরকমটাও ঘটে, সত্যি ঘটে? নিজেদের চোখকেও বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে পড়ছে। অবিশ্বাস্য হলেও, এই ছবিটি একেবারে সত্যি। সামান্য ফটোশপের কারিকুরি রয়েছে, বাকিটা প্রকৃতির খেলা।
ছবিটি কুয়ালালামপুর শহরের আকাশে এক বজ্রগর্ভ ঝড়ের ছবি। আসলে, এটি একটি ছবি নয়। ৪০ মিনিট ধরে তোলা ৩২টি পৃথক ছবির একটি সংকলন। আর তাতেই ধরা পড়েছে এই চমকপ্রদ বজ্রগর্ভ ঝড়ের ভয়ঙ্কর সুন্দর রূপ। বিস্ময়কর ছবিটি বা ছবিগুলি ক্যামেরা বন্দি করেছেন মালয়েশিয় ফটোগ্রাফার ফেন্দি গ্যান। অবশ্য ছবিটি তোলার ক্ষেত্রে তাঁর কোনও কৃতিত্ব নেই বলেই দাবি করেছেন ফেন্দি।
নিউজউইককে ফেন্দি গ্যান বলেছেন, “আমি শুধু আমার ক্যামেরাটি ইন্টারভ্যাল শুটিং মোডে (কিছুক্ষণের বিরতি রেখে টানা ছবি তুলে যাওয়া) সেট করেছিলাম এবং পরে ছবিগুলি ফটোশপের সাহায্যে একত্রিত করেছি। বছরের বেশিরভাগ সময়ই আমাদের এখানে প্রচুর বজ্রপাত হয়। কিন্তু এই ঝড়টি আলাদা ছিল। কারণ, আকাশ অত্যন্ত পরিষ্কার ছিল এবং ঘন ঘন আঘাত হেনেছিল বজ্রপাত।”
গ্রীষ্মমন্ডলীয় জলবায়ু এবং ভৌগলিক অবস্থানের জন্য মালয়েশিয়ায় ঘন ঘন বজ্রপাত হয়ে থাকে। বজ্রগর্ভ ঝড়ও কম হয় না। বিশেষ করে ক্লাং উপত্যকা, যেখানে এই ছবিটি তোলা হয়েছে, সেই উপত্যকা তো বজ্রগর্ভ ঝড়ের জন্য সুপরিচিত। বছরে গড়ে ২৪০ দিন বজ্রঝড় হয় এই উপত্যকায়। ফেন্দি গ্যান বলেছেন, “আমার বিশ্বাস, ক্লাং উপত্যকাতেই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয়। ”
ঝড়ের সময় মেঘ এবং ভুপৃষ্ঠের মধ্যে বা দুটি মেঘের স্তরের মধ্যে বৈদ্যুতিক চার্জের ভারসাম্যহীনতার কারণেই বজ্রপাত ঘটে। মেঘে মেঘে ঘর্ষণের ফলে স্ট্যাটিক ইলেকট্রিসিটি তৈরি হয়। বজ্রপাতের সময়, বাতাসের স্রোত উপরের দিকে উঠে যায় এবং জলের কণাগুলি নীচের দিকে নেমে আসে। এই প্রক্রিয়ার ফলে, পজিটিভ চার্জ মেঘের উপরের প্রান্তে জমা হয়। আর, নেগেটিভ চার্জ মেঘের নীচের প্রান্তে এবং ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি জমা হয়। অত্যধিক মাত্রায় চার্জ জমা হলে, বাতাসে ভাসা জলের কণাগুলি ওই চার্জের পরিবাহী হিসাবে কাজ করে। এইভাবে বজ্রপাত তৈরি হয়।