নয়া দিল্লি: শশী থারুরকে ৬০০০-এর বেশি ভোটে পরাজিত করে কংগ্রেসের নয়া সভাপতি নির্বাচিত হলেন মল্লিকার্জুন খাড়্গে। তিরুবনন্তপুরমের সাংসদ শশী থারুর যেখানে ১,০৭২ ভোট পেয়েছেন, খাড়্গে পেয়েছেন ৭,৮৯৭ ভোট। ফলে ২৪ বছর পর, ‘অ-গান্ধী’ সভাপতি পেল কংগ্রেস। খাড়্গে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন এক শ্রমিক নেতা হিসেবে। সেখান থেকে কীভাবে কংগ্রেসের শীর্ষ পদে উঠে এলেন তিনি?
১৯৪২ সালে কর্নাটকের বিদারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন মল্লিকার্জুন খার্গে। শেঠ শঙ্করলাল লাহোটি কলেজে আইন নিয়ে পড়ার সময়ই রাজনীতিতে প্রবেশ করেছিলেন তিনি। তারপর তিনি আত্মপ্রকাশ করেছিলেন শ্রমিক সংগঠনের নেতা হিসেবে। শ্রমিক সংগঠন থেকেই ১৯৬৯ সালে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন খাড়্গে। তাঁকে গুলবর্গা সিটি কংগ্রেস কমিটির সভাপতি করা হয়েছিল। তারপর থেকে পাঁচ দশক ধরে ধাপে ধাপে দলের শীর্ষ পদে উঠে এসেছেন তিনি।
১৯৯৯, ২০০৪ এবং ২০১৩ – তিন-তিনবার তাঁর সামনে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ এসেছিল। তাঁর নাম নিয়ে চর্চা হয়েছিল। কিন্তু, প্রত্যেকবারই অন্যান্য প্রার্থীরা পদ পেয়েছেন। তাঁর মুখ্যমন্ত্রী হওয়া হয়নি। তবে, মনমোহন সিং সরকারে তিনি রেলমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছিলেন। ২০১৯ সালে তাঁকে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা করা হয়েছিল। কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সেই পদে ইস্তফা দেন তিনি।
নির্বাচনী ময়দানে খাড়্গের সাফল্য অতুলনীয়। যার জন্য তাঁকে ‘সলিলাদা সর্দারা’ নামে ডাকা হয়। এর অর্থ, এমন একজন যোদ্ধা যাঁর পরাজয় হয় না। বস্তুত, এখনও পর্যন্ত বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচন মিলিয়ে মোট ১২টি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তিনি। এর মধ্যে শুধুমাত্র একবারই পরাজিত হয়েছেন। ২০১৯ সালে তিনি তাঁরই এক সময়ের নির্বাচনী এজেন্ট, উমেশ যাদবের কাছে ৯৫,৪৫২ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন। বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন উমেশ।
এদিনের দলীয় নির্বাচনে জয়ের পর, দ্বিতীয় দলিত নেতা হিসেবে কংগ্রেস প্রধান পদে আসীন হলেন খাড়্গে। তাঁর আগে প্রথম দলিত নেতা হিসেবে কংগ্রেস সভাপতি হয়েছিলেন জগজীবন রাম। পাশাপাশি, কর্ণাটকের দ্বিতীয় নেতা হিসেবে কংগ্রেস সভাপতি হলেন তিনি। ১৯৬৮ সালে কং সভাপতির পদে বসেছিলেন কর্নাটকের আরেক নেতা এস নিজলিঙ্গপ্পা। কং সভাপতি হিসেবে একটি বাড়তি সুবিধাও পাবেন খাড়্গে। তা হল, তাঁর বিভিন্ন ভারতীয় ভাষার উপর দখল। তাঁর মাতৃভাষা কন্নড়। এছাড়াও, তিনি হিন্দি, উর্দু, মারাঠি, তেলেগু এবং ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন। কাজেই বিভিন্ন প্রদেশের দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ভাষা সমস্যা হবে না তাঁর।