নয়া দিল্লি: সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিজেপি বাদে অন্য কোনও দলের সঙ্গে জোট করতে দ্বিধা নেই বামেদের। ৭২ ঘণ্টা আগেই এই মন্তব্য করে রাজ্য রাজনীতিতে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। জাতীয় রাজনীতিতে বামেদের অবস্থান ঠিক কী, এ বার সেটা সাফ করতে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার রাজধানীতে সংসদীয় কমিটির এক বৈঠকে এই প্রসঙ্গে মুখ খোলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কেরলে প্রসঙ্গ টেনে বাংলার বামেদের নিয়ে তাঁর প্রশ্ন, “ওরা পারবে না কেন?”
২০২৪ এর লক্ষ্যে বৃহত্তর জোট গঠনের যে চেষ্টা মমতা দিল্লিতে পা রাখার পরই শুরু করেছেন, তা আপতত প্রাথমিক স্তরে। কিন্তু এই জোটে যে বামেদেরই শামিল করতে চান, সেটা আগে থেকেই জানিয়ে রেখেছেন তিনি। পরিস্থিতি যদি তেমনই হয়, সেক্ষেত্রে এ রাজ্যে বামেরা ঠিক কোন ভূমিকা নেবে, সেটা এখন থেকেই সাফ করে দিক নেতৃত্ব, এমনটাই দাবি নেত্রীর। সূত্রের খবর, আজকের বৈঠকে বামেদের প্রসঙ্গ উত্থাপন হলে তিনি বলেন, “বামেদের আগে ঠিক করতে হবে বড় শত্রু কে। জাতীয় স্তরে ওদের অবস্থান জানাক।”
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মমতার এই মন্তব্য যে রাজনৈতিকভাবে বিরাট অর্থ বহন করছে তা আলাদা করে না বললেও চলে। কেননা ভোটের আগে পর্যন্ত বামেরা বিজেপি ও তৃণমূল; উভয় দলকেই কার্যত একই বন্ধনীতে রেখে এসেছে। সেই থেকেই ‘বিজেমূল’ শব্দের উৎপত্তি। দুই দলকে এক ছাতার তলায় রেখে বামেদের সেই প্রচার অবশ্য চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়েছে। তারপরেই সুর কিছুটা বদলেছে আলিমুদ্দিন। বিমান বসুর মতো বর্ষীয়ান নেতা ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। কিন্তু সেই অর্থে পলিটব্যুরো নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেনি। এ বার কার্যত সেই অবস্থান সাফ করার আহ্বান জানালেন মমতা। অন্তত এ রাজ্যের বামেদের নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে, রাজনৈতিক মহলের মতে, এ দিন হাবেভাবে সেটাই বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সিপিএম কী করবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে বামফ্রন্ট শরিক সিপিআই এ দিন পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে, জাতীয় স্তরে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করায় সমস্যা নেই তাদের। সিপিআই-এর রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার এক সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দেন, বিজেপির মত শক্তিকে সরাতে সর্বভারতীয় স্তরে তৃণমূলকে সঙ্গে নিয়ে ফ্রন্ট গড়তে আপত্তি নেই সিপিআই-এর। আরও পড়ুন: বেড়ালের গলায় ঘণ্টা আমিই বাঁধব: মমতা