মুম্বই: নিজের অ্যাপার্টমেন্টের সামনেই রাস্তায় পড়ে ব্যক্তির দেহ। তাঁর স্ত্রীর মোবাইলে ফোন করে দেখা গেল কেউ ধরলেন না। পুলিশ ও পড়শিরা অ্যাপার্টমেন্টে গিয়ে দেখলেন দরজায় তালা দেওয়া। তারপরই ব্যক্তির মৃতদেহের দিকে নজর পড়তেই চমকে গেলেন সবাই। মৃতদেহের গলায় লকেটের মতো জড়ানো রয়েছে বাড়ির চাবি। আর সেই চাবি নিয়ে অ্যাপার্টমেন্ট খুলে পুলিশ দেখল রুমের মধ্যে পড়ে রয়েছে ওই ব্যক্তির স্ত্রীর দেহ। ঘটনাটি ঘটেছে মুম্বইয়ের গোরেগাঁওয়ে।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার সকালে। জাওয়াহর নগরে রাস্তায় পড়ে ছিল বছর আটান্নর কিশোর পেদনেকরের দেহ। জিমের সরঞ্জাম বিক্রি করতেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, নিজের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে রাস্তায় ঝাঁপ মেরে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই ব্যক্তি। স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে কিশোর পেদনেকরকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
কিশোরের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রীকে ফোন করে দুর্ঘটনার কথা জানানোর চেষ্টা করে পুলিশ। একাধিকবার ফোন করা হলেও কেউ ফোন ধরেননি। তখন কিশোরের অ্যাপার্টমেন্টে যায় পুলিশ। কিন্তু, সেখানে গিয়ে দেখা যায় অ্যাপার্টমেন্টে তালা দেওয়া। তারপরই পুলিশের নজরে পড়ে কিশোরের গলায় লকেটের মতো করে দুটি চাবি ঝুলছে। সেই চাবি দিয়ে দরজা খুলে অ্যাপার্টমেন্টে ঢোকে পুলিশ। সেখানেই হলের মধ্যে পড়ে থাকতে দেখা যায় কিশোরের স্ত্রী রাজশ্রীকে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। শ্বাসরোধ করে বছর সাতান্নর রাজশ্রীকে খুন করা হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। রাজশ্রী পেশায় থেরাপিস্ট ছিলেন। পুলিশ মনে করছে, স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করে অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন কিশোর।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন কিশোর। মানসিক অবসাদ কাটাতে চিকিৎসকও দেখিয়েছিলেন। তাঁর অ্যাপার্টমেন্ট থেকে এই সংক্রান্ত প্রেসক্রিপশন পাওয়া গিয়েছে। স্ত্রীকে খুন করে আত্মঘাতী হওয়ার কথা যে কয়েকদিন আগে থেকে ভাবছিলেন কিশোর, তারও ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁদের পুত্র দিল্লিতে কাজ করেন। পুত্রের ফেরার জন্য দিল্লি থেকে মুম্বইয়ের একটি ফ্লাইটের টিকিট বুক করে রেখেছেন কিশোর। এমনকি, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সমস্ত তথ্য এক আত্মীয়দের হোয়াটসঅ্যাপও করেন। তারপরই চরম সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তাঁর এই চরম পদক্ষেপের কথা স্ত্রী জানতেন কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।