মুম্বই: দীর্ঘ এক বছর ধরে করেছিলেন পরিকল্পনা, হিসাব কষেছিলেন কীভাবে সরানো যায় টাকা। এইভাবেই একদিন দেখা গেল যে ব্যাঙ্ক থেকে উধাও ১২ কোটি টাকা। মুম্বইয়ের থানের আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক থেকে এভাবেই এক কর্মী হাতিয়ে নিয়েছিলেন ১২ কোটি টাকা,অথচ গোটা সময়ে ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। যতদিনে জানা যায় যে টাকা উধাও, ততদিনে গায়েব হয়ে গিয়েছেন ওই ব্যক্তি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১২ জুলাই মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে ১২ কোটি টাকা চুরি হয়। দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে তল্লাশি চালানোর পর অবশেষে গ্রেফতার করা হয়েছে আলতাফ শেখ (৪৩) নামক ওই অভিযুক্তকে। পুণে থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। থানের মানপাডা এলাকার আইসিআইসিআই ব্য়াঙ্কেই কর্মরত ছিলেন ওই ব্যক্তি। সেখান থেকেই বাকিদের অলক্ষ্যে তিনি ১২ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। পুলিশ অভিযুক্তের কাছ থেকে ৯ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে।
জানা গিয়েছে, চলতি সপ্তাহের সোমবারই আলতাফকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় এখনও অবধি মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রধান অভিযুক্ত আলতাফের বোনও এই চুরিতে জ়ড়িত ছিল বলেই জানা গিয়েছে। মুম্বরার বাসিন্দা আলতাফ আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের কাস্টোডিয়ান হিসাবে কাজ করতেন। তাঁর কাছেই লকারের চাবি থাকত। বিগত এক বছর ধরে অভিযুক্ত কীভাবে চুরি করা যায়, তার পরিকল্পনা করে, ব্যাঙ্কের সিস্টেমে কোথায় কী গলদ রয়েছে, তাও খুঁজে বের করেন।
এরপর পরিকল্পনা মাফিক তিনি এসির হাওয়া যাতায়াতের জন্য় যে লম্বা জায়গা, যাকে ডাক্ট বলে, তার মধ্যে দিয়ে টাকা সরাতে শুরু করে। ওই টাকা গিয়ে পড়ত একটি নির্দিষ্ট একটি ময়লা ফেলার ডাক্টে। প্রমাণ লোপাট করতে সিসিটিভি ফুটেজও বিকৃত করে অভিযুক্ত।
জানা গিয়েছে, ব্যাঙ্কের অ্য়ালার্ম সিস্টেম বন্ধ করে দেওয়া এবং সিসিটিভি বিকল করে দেওয়ার পর আলতাফ শেখ ব্যাঙ্কের ভল্ট খোলেন এবং টাকা ডাক্ট দিয়ে নীচে ফেলে দেন। পরে নীচে গিয়ে সেই টাকা সংগ্রহ করে নেয় সে। গোটা ঘটনাটি সামনে আসে যখন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ দেখতে পায় যে ব্যাঙ্কের সিকিউরিটি মানি বাবদ রাখা টাকা উধাও। সঙ্গে সঙ্গে সিসিটিভির ডিভিআরও খতিয়ে দেখা হয়।
টাকা চুরির পরই আলতাফ শেখ মুম্বই ছেড়ে পালিয়ে যান। পরিচয় গোপন করতে তিনি নিজের রূপও বদলে ফেলেন। বুরখা পরেই তিনি আত্নগোপন করে থাকতেন। জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের বোন নিলোফার গোটা ঘটনা সম্পর্কে জানতেন। তাঁর বাড়িতেও বেশ কিছু টাকা লুকানো ছিল। তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও অবধি ৯ কোটি টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। শীঘ্রই আরও ৩ কোটি টাকা উদ্ধার করা যাবে বলেই আশাবাদী পুলিশ।