ইম্ফল: ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ নিয়ে চর্চা চলছে গোটা বিশ্বজুড়ে। এরই মধ্যে ফের উত্তেজনা বাড়ল মণিপুরে। মঙ্গলবার বিকালেই মণিপুর মন্ত্রিসভা জানিয়েছিল, এদিন সকালে মায়ানমার সীমান্তবর্তী শহর মোরেতে, এক পদস্থ পুলিশ কর্তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। অভিযোগ ছিল কুকি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে। মন্ত্রিসভার এই ঘোষণার ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই ফের আক্রান্ত হল পুলিশ বাহিনী। পুলিশ কর্তার হত্যার পর, মোরেতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মণিপুর সরকার। এদিন বিকেলে সেই অতিরিক্ত বাহিনীর সদস্যদের উপরই, অতর্কিতে হামলা চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। এমনটাই জানিয়েছে মণিপুর পুলিশ। এর জেরে আরও দুই পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন।
এদিন মণিপুর মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, মায়ানমার সীমান্ত লাগোয়া টেংনোপাল জেলার মোরে শহরে, চিংথাম আনন্দ কুমার নমে এক এসডিপিও ব়্যাঙ্কের পুলিশ কর্তাকে গুলি করে হত্যা করেছে কুকি যোদ্ধারা। সেখানকার এক স্কুলের মাঠে বিএসএফ এবং রাজ্য পুলিশ যৌথ উদ্যোগে একটি হেলিপ্যাড তৈরি করা হচ্ছিল। মাঠ পরিষ্কারের কাজের তদারকি করছিলেন চিংথাম আনন্দ কুমার। সেই সময়ই তাঁর তলপেট লক্ষ্য ছুটে আসে গুলি। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে স্থানীয় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আনা হয়েছিল। কিন্তু, বাঁচানো যায়নি। পুলিশের অনুমান কোনও স্নাইপার বন্দুক থেকে গুলি ছোড়া হয়েছিল।
এরপর, মোরেতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে রাজ্য পুলিশের কমান্ডোদের একটি বাহিনীকে সেখানে পাঠানো হচ্ছিল। কিন্তু, বিকেল ৩টে নাগাদ, তেংনউপাল জেলার সিনাম গ্রামের কাছে, পুলিশ কমান্ডোদের কনভয়ের উপর অতর্কিতে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। জায়গাটি মোরে থেকে প্রায় ৪৯ কিলোমিটার দূরে। পুলিশ কমান্ডোরা হামলার মুকে পড়েছে খবর পেয়ে, ঘটনাস্থলে ছুটে যায় অসম রাইফেলসের সেনারা। সরকারি সূত্র জানা গিয়েছে তারাই পুলিশ কমান্ডোদের উদ্ধার করেছে। আহক কমান্ডোদের অনেককেই হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।
ইম্ফল থেকে মোরের দূরত্ব খুব বেশি না হলেও, ইম্ফল-মোরের রাস্তা পাহাড়-জঙ্গলে ঘেরা। রাস্তায় বেশ কয়েকটি হেয়ারপিন বাঁক রয়েছে। এই বাঁকগুলিতে সবসময়ই অতর্কিত হামলার ঝুঁকি থাকে। তাই সেই পথে বিএসএফ বা পুলিশ সদস্যদের ওই সীমান্তবর্তী শহরে পাঠানোটা ক্রমে কঠিন হয়ে পড়ছে। এই সমস্যার সমাধানেই মোরে শহরে ওই স্কুলের মাঠে একটি বড় মাপের হেলিপ্যাড তৈরি করা হচ্ছে। মোরেতে অবশ্য আরও দুটি হেলিপ্যাড আছে। দুটিই অসম রাইফেলসের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেই হেলিপ্যাড তৈরি করার সময়ই হামলার মুখে পড়ল বিএসএফ এবং রাজ্য পুলিশ বাহিনী।