ইম্ফল: চার দশকের পুরোনো সশস্ত্র গোষ্ঠী অস্ত্র সমর্পণ করে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করছে। কিন্তু, মণিপুরের হিংসা কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না। সোমবার বিকেলে টেংনুপাল জেলায় নতুন করে হিংসার শিকার হলেন কমপক্ষে ১৩ জন। নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এদিন দুপুরের দিকে টেংনোপাল জেলার সাইবোলের কাছে লেইথু গ্রামে দুই সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বেধেছিল বলে খবর রয়েছে তাদের কাছে। ব্যাপক গুলির লড়াই চলে। এই এলাকা থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে ছিল নিরাপত্তা বাহিনী। সেখান থেকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে, লেইথু গ্রামে ঢুকে বাহিনির সদস্যরা ১৩টি দেহ উদ্ধার করে। তবে, তাদের পাশে কোনও অস্ত্রশস্ত্র পড়ে ছিল না। নিরাপত্তা কর্তারা আরও জানিয়েছেন, মৃত ব্যক্তিরা লেইথু গ্রাম বা আশপাশের এলাকার নয়। তারা সম্ভবত, অন্য জায়গা থেকে সেখানে এসেছিল এবং অপর এক সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের গুলির লড়াই বাধে।
নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। তারা কোন সম্প্রদায়ের তা জানাতে চায়নি নিরাপত্তা বাহিনী। মণিপুর পুলিশের এক কর্তা বলেছেন, “পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। তারা বিষয়টি তদন্ত করবে।” নিরাপত্তা বাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে, সাইবোল থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমে এক এলাকায় মৃতদেহগুলি পাওয়া গিয়েছে। ওই এলাকায় এর আগে পর্যন্ত কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি। তবে, সাইবোলে অতি সম্প্রতি অসম রাইফেলসের একটি টহলদারি গাড়ির উপর আইইডি হামলা করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় যদিও দুই জওয়ান সামান্য আঘাত পেয়েছিলেন, বাকিরা অক্ষতই ছিলেন।
গত ৩ মে থেকে মেইতেই এবং কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা অব্যাহত রয়েছে। এই সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং প্রায় ৫০,০০০ মানুষ ঘর ছাড়া হয়েছেন। এর জেরে রাজ্যে গত সাত মাস ধরে প্রায় একটানা ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে, সম্প্রতি হিংসার ঘটনা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। মেইতেই এবং কুকি অধ্যুষিত জেলাগুলির সীমান্ত বরাবর বিক্ষিপ্তভাবে হিংসা অব্যাহত থাকলেও, রাজ্যের বেশ কিছু উপদ্রুত এলাকায় শান্তি ফিরে এসেছে বলে, জানিয়েছিল নিরাপত্তা বাহিনী। তাই, গত রবিবারই মণিপুর সরকার ওই জেলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলি বাদ দিয়ে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিল।এর মধ্যে, কেন্দ্র এবং মণিপুর সরকারের সঙ্গে রাজ্যের সবথেকে পুরোনো সশস্ত্র সংগঠন ইউএনএলএফ একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। সেই চুক্তি স্বাক্ষরের চার দিন পরই ইন্টারনেট নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। কিন্তু, এদিন ফের হিংসা ফিরল মণিপুরে।