Manipur Case: ‘আইন-শৃঙ্খলা নেই, ভেঙে পড়েছে রাষ্ট্রযন্ত্র’, মণিপুর পুলিশকে সুপ্রিম ভর্ৎসনা; তলব ডিজিপিকে

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Aug 01, 2023 | 4:57 PM

Manipur Case in Supreme Court: আদালত দেখেছে, বেশ কিছু ক্ষেত্রে ঘটনার পর প্রায় তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়নি। হিংসার বিষয়ে ৬০০০-এর বেশি এফআইআর করা হয়েছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত গ্রেফতারের সংখ্যা হাতে গোনা। এই অবস্থায়, শুক্রবার দুপুর ২টোয় শীর্ষ আদালতে মণিপুর পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলকে ব্যক্তিগতভাবে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ।

Manipur Case: আইন-শৃঙ্খলা নেই, ভেঙে পড়েছে রাষ্ট্রযন্ত্র, মণিপুর পুলিশকে সুপ্রিম ভর্ৎসনা; তলব ডিজিপিকে
মণিপুর পুলিশ এবং প্রশাসনকে তীব্র ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট
Image Credit source: PTI

Follow Us

নয়া দিল্লি: মঙ্গলবার (১ অগস্ট) মণিপুরের হিংসার বিষয়ে একগুচ্ছ মামলার শুনানি চলাকালীন, মণিপুর পুলিশ এবং প্রশাসনকে তীব্র ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট। তিন মাস ধরে চলা এই লাগাতার হিংসার বিভিন্ন ঘটনার তদন্তের ক্ষেত্রে মণিপুর পুলিশের আলস্য ধরা পড়েছে বলে নিন্দা করেছে শীর্ষ আদালত। শুধু তাই নয়, আদালতের মতে, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা এবং রাষ্ট্রযন্ত্র পুরোপুরি ভেঙে পড়েছ। আদালত দেখেছে, বেশ কিছু ক্ষেত্রে ঘটনার পর প্রায় তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়নি। হিংসার বিষয়ে ৬০০০-এর বেশি এফআইআর করা হয়েছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত গ্রেফতারের সংখ্যা হাতে গোনা। এই অবস্থায়, শুক্রবার দুপুর ২টোয় শীর্ষ আদালতে মণিপুর পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলকে ব্যক্তিগতভাবে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ।

প্রদান বিচারপতি বলেছেন, “তদন্তে যে বিলম্ব হয়েছে, তা প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে পরিষ্কার। এফআইআর নিবন্ধন, সাক্ষীদের বক্তব্য নথিভুক্ত করা এবং গ্রেফতারের মধ্যে প্রচুর সময়ের ফারাক রয়েছে। ক্রমানুসারে কীভাবে তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে, তা জানতে চায় আদালত। তাই, আমরা মণিপুরের ডিজিপিকে শুক্রবার দুপুর ২টোয় ব্যক্তিগতভাবে আদালতে উপস্থিত থাকতে এবং আদালতের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য তৈরি থাকতে নির্দেশ দিচ্ছি।” সোমবার থেকে মণিপুর হিংসার বিষয়ে একগুচ্ছ আবেদনের শুনানি শুরু হয়েছে। এর মধ্যে, ভাইরাল ভিডিয়োতে য়ে দুই মহিলাকে যৌন হিংসার শিকার হতে দেখা গিয়েছিল, তাঁদের আবেদনও রয়েছে। গতকাল, শীর্ষ আদালত ‘পদ্ধতি হিংসা’র বিষয়ে রাজ্যের কাছে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন তুলেছিল। এদিন রাজ্যের পক্ষে সেই প্রশ্নগুলির লিখিত জবাব জমা দেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।

তুষার মেহতা এদিন আদালতকে জানান, মোট ৬৫৩২টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১টি মামলা মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের। এর মধ্যে কতগুলি ‘জিরো এফআইআর’ এবং সেগুলি কতদিনের মধ্যে নিয়মিত এফআইআর-এর রূপান্তরিত হয়েছে, তা জানতে চান প্রধান বিচারপ। সলিসিটর জেনারেলের কাছে এর জবাব ছিল না। যৌন হিংসার যে ভয়ানক ভিডিয়োটি ভাইরাল হয়ে গোটা দেশে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে, সেই ভিডিয়োটি সম্পর্কেও প্রস্ন করেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। এই মামলায় দোষীদের করে গ্রেফতার করা হয়েছে, প্রশ্ন করেন তিনি। সুনির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারেননি তুষার মেহতা। দুই মহিলা এবং এক নাবালককে গাড়ি শুদ্ধ জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনা নিয়েও প্রশ্ন করেন প্রধান বিচারপতি।

তুষার মেহতার লিখিত জবাব পড়ে প্রদান বিচারপতি বলেন, “৪ মে-র ঘটনার বিষয়ে এফআইআর নথিভুক্ত হচ্ছে ৭ জুলাই। স্পষ্টতই এফআইআর দায়ের করতে অনেক দেরী হয়েছে। এটা গুরুতর বিষয়। একটি বা দুটি মামলা ছাড়া, কোনও মামলার ক্ষেত্রে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। খুবই অলস গতিতে তদন্ত চলছে। দুই মাস পর এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়নি। দীর্ঘ সময়ের পর সাক্ষীদের বিবৃতি রেকর্ড করা হয়েছে। মনে হচ্ছে, মে মাসের শুরু থেকে জুলাইয়ের শেষ অবধি রাজ্যে কোনও আইন ছিল না। রাষ্ট্রযন্ত্র সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছিল। এফআইআরও নথিভুক্ত করা যায়নি। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের সম্পূর্ণ বিপর্যয় ঘটছে এটা বলাটা কি অসত্য হবে? রাজ্য পুলিশ তদন্তে অক্ষম। পরিস্থিতির উপর তাদের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। আইন-শৃঙ্খলা একেবারেই নেই। ৬০০০-এর বেশি এফআইআর, আর আপনারা গ্রেফতার করেছেন মাত্র ৭ জনকে!”

মণিপুরের নির্যাতিতা মহিলারা অভিযোগ করেছিলেন, পুলিশকর্মীরাই তাদের দৃষ্কৃতীদের হাতে তুলে দিয়েছিল। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে কিনা,তাও জানতে চান প্রধান বিচারপতি। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘ডিজিপি কি জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন? ডিজিপি করছেন কী? এটা তো তাঁরই দায়িত্ব।” তবে, তারপরও মণিপুর হিংসার বিষয়ে হওয়া সমস্ত এফআইআর সিবিআইকে হস্তান্তর করতে রাজি হয়নি শীর্ষ আদালত। আদালতের মতে, সেই ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সংস্থাটিও ভেঙে পড়বে। আদালত জানিয়েছে, যৌন হিংসার যে ১১টি মামলা আছে, শুধুমাত্র সেগুলিরই তদন্ত করবে সিবিআই। খুন ও ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগের ফলে সম্পত্তি ধ্বংস, ধর্মীয় স্থানে হামলা, গুরুতর আঘাত – .অপরাধের প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে এফআইআরগুলিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারকদের নিয়ে একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠনের কথাও ভাবা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

Next Article