ইম্ফল: আরও উত্তপ্ত হচ্ছে মণিপুর (Manipur)। মেতেই জনগোষ্ঠীকে তফসিলি সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত করা ঘিরে রাজ্যে ছড়িয়েছে উত্তেজনা। দফায় দফায় অশান্তি, সংঘর্ষে কমপক্ষে প্রায় ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত কয়েকশো সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বুধবার থেকেই বেশ কিছু জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল, পাঁচ দিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল ইন্টারনেট পরিষেবা। ক্ষিপ্ত জনতাকে সামাল দিতে নামানো হয় সেনা (Army) ও অসম রাইফেলস বাহিনীও (Assam Rifles)। রাজ্যপাল শর্তসাপেক্ষে ‘শুট অ্যাট সাইট’-র নির্দেশও দেন। এত কিছুর পরও শান্তি ফেরেনি মণিপুরে। সেই কারণেই শুক্রবার থেকে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা কেন্দ্র নিজের হাতে তুলে নেয়। মণিপুরে জারি করা হয়েছে ৩৫৫ ধারা। সূত্রের খবর, শুক্রবার ও শনিবার ফের নতুন করে অশান্তি ছড়িয়েছে কয়েক জায়গায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে আরও নিরাপত্তা বাহিনী আনা হচ্ছে রাজ্যে। অন্যদিকে, রাজ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে শনিবারই সর্বদলীয় বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং(N Biren Singh)।
জানা গিয়েছে, সর্বদলীয় বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওকরাম ইবোবি- দুজনেই রাজ্যে শান্তি ও আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলির একযোগে কাজ করা উচিত বলে জানান। সাধারণ মানুষের কাছেও রাজ্যে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার আর্জি জানাবেন তাঁরা, এমনটাই জানা যায়।
অন্যদিকে, রাজ্যে সেনা বাহিনী মোতায়েন থাকা সত্ত্বেও শুক্রবার ও শনিবার ফের বেশ কিছু জায়গায় অশান্তি ছড়ায়। শুক্রবার রাতে চুরাচন্দ্রপুর, যেখান থেকে এই অশান্তির শুরু হয়েছিল, সেখানে সশস্ত্র কিছু মানুষের সঙ্গে সেনার সংঘর্ষ বাধে। বিভিন্ন হাসপাতালে আহত ও নিহতদের আনা হয়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা। তবে এখনও অবধি রাজ্যে সংঘর্ষে মোট কত প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, তা জানা যায়নি। সরকারি এক সূত্রে খবর, রাজ্যে অশান্তিতে এখনও পর্যন্ত ৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত শতাধিক।
মণিপুরে পরিস্থিতি সামাল দিতে বর্তমানে ১৪ কোম্পানি সেনা মোতায়েন রয়েছে। কেন্দ্রের তরফে আরও ২০ কোম্পানি সেনা পাঠানো হচ্ছে বলেই জানা গিয়েছে। ড্রোনের মাধ্যমে নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মায়ানমার সীমান্তেও। অন্যদিকে, বিগত কয়েকদিনে মণিপুরে আটটি পুলিশ স্টেশনে লুঠপাট চলেছে। যাবতীয় অস্ত্রশস্ত্র কেড়ে নিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের অস্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আর্জি জানিয়েছে পুলিশ।