নয়া দিল্লি: চিনের গতিবিধির উপরে কড়া নজর রাখছে কেন্দ্র। লাদাখের কাছে চিন যে নির্মাণ কাজ শুরু করেছে, তা নিয়ে সম্প্রতিই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল আমেরিকা। এরপরই বৃহস্পতিবার বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হল যে ভারত সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে, বিশেষ করে দেশের পশ্চিমাংশে চিন যে নির্মাণ কাজ শুরু করেছে,তার উপরে কড়া নজর রাখছে কেন্দ্রীয় সরকার।
বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেন, “বিগত কয়েক বছরে কেন্দ্রীয় সরকার সীমান্ত এলাকায় নির্মাণকাজ নিয়ে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। দেশের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা বজায় রাখতে যথাযথ পদক্ষেপ করেছে সরকার।”
উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহেই মার্কিন জেনারেল চার্লস এ ফ্লিন ভারতের সীমান্তের কাছে চিনের নির্মাণকাজ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। লাদাখের কাছে লাল ফৌজ যেভাবে পরিকাঠামো গঠন শুরু করেছে, তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। কেন চিন এই কাজ করছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। মার্কিন জেনারেলের এই উদ্বেগ প্রকাশের পরই ভারতের তরফেও নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করা হল।
গত ৩১ মে ভারত-চিনের মধ্যে ভার্চুয়াল বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার বর্তমান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হয় এবং আগামিদিনেও কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে আলোচনা জারি রাখার প্রস্তাবে সম্মতি জানানো হয়। এই বৈঠকে ভারতের তরফে উপস্থিত ছিলেন বিদেশমন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব (পূর্ব এশিয়া) নবীন শ্রীবাস্তব। চিনের তরফে উপস্থিত ছিলেন বিদেশমন্ত্রকের প্রতিনিধি হং লিয়াং। বৈঠকে দুই দেশের তরফে মিলিতভাবে বিদেশমন্ত্রীদের মধ্যা আন্তঃআলোচনার প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়া হয়। পূর্ব লাদাখের কাছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় পরিস্থিতি যাতে দ্রুত স্বাভাবিক হয়, তার জন্য কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে আলোচনা জারি রাখার কথাও বলা হয়।
ভারত-চিন সম্পর্কে ফাটল-
দীর্ঘ সময় ধরেই ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে টানাপোড়েন লেগেই রয়েছে। ২০২০ সালে এই সম্পর্ক আরও তিক্ত হয় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখাকে ঘিরে টানাপোড়েনের কারণে। ২০২০ সালের মার্চ-এপ্রিল মাস নাগাদ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার ঠিক পাশে নির্মাণকাজ শুরু করেছিল লাল ফৌজ। সেই সময়ে ভারতের সেনাবাহিনী আটকাতে গেলে দুই দেশের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। জুন মাসে গালওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় দুই দেশের মধ্যে। ভারতের ২০ জন জওয়ান শহিদ হন। চিনেরও বিপুল সংখ্যক সেনার মৃত্যু হয়েছিল। এরপর দুই দেশের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনায় দুই দেশের সেনাবাহিনী মুখোমুখি অবস্থান থেকে কিছুটা পিছিয়ে আসে। কিন্তু এখনও অবধি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার পরিস্থিতি।