নয়া দিল্লি: পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে (West Bengal Election 2021) হিংসার ঘটনা ঘটতে পারে, বারবার এমনটা দাবি করেছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি। কিছুদিন আগে বঙ্গ বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ১০ দফায় ভোটের দাবিও জানিয়েছিল। তবে সম্ভবত, বাংলায় ভোট হবে ৬ থেকে ৭ দফায়। বুধবার নির্বাচন কমিশনের বৈঠক থেকে এমনই তথ্য উঠে এসেছে। সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে পাঁচ রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রাথমিক রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে।
বুধবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা, ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। দু’দফায় হয় সেই বৈঠক। আড়াই ঘণ্টা ধরে চলে প্রথম দফার বৈঠক। চলতি বছরেই অসম, কেরল, পুদুচেরি, তামিলনাড়ু ও পশ্চিমবঙ্গ এই পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। কোন রাজ্যে কত দফায় ভোট হবে, কোথায় কত কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হবে, এই সব বিষয়ে আলোচনা করতেই বৈঠক হয় বুধবার। সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গে ৬ থেকে ৭ দফায় ভোট হবে বলে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ রাজ্যের ৭০০০ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
কোন রাজ্যে কত দিন পর্যন্ত বিধানসভার মেয়াদ রয়েছে তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে এ দিন। হিসেব মতো, পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার মেয়াদ ফুরোচ্ছে ৫ মে। তার আগেই ভোট প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে। তাই ৭ মার্চের মধ্যেই ভোট ঘোষণা করে পারে কমিশন। তার আগে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে আসবেন সুনীল অরোরা ও সুদীপ জৈন। আগেও রাজ্যে এসেছেন তাঁরা। আগামিকাল, বৃহস্পতিবার দু’দিনের সফরে রাজ্যে আসছেন তাঁরা।
বৈঠকে করোনার দ্বিতীয় ওয়েভের আতঙ্ক নিয়েও কথা হয়েছে। দেশের একাধিক রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে নতুন করে। সেই পরিস্থিতিতে যাতে নিরাপদে ভোট প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা যায় সে দিকে খেয়াল রাখতে চায় কমিশন। বয়স্ক নাগরিকদের কথাও বিশেষ ভাবে মাথায় রেখে পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে। পিপিই কিট কিংবা মাস্ক কোথায়, কিভাবে পাঠানো হবে, তা নিয়েও ভাবনা-চিন্তা করছেন কমিশনের আধিকারিকরা।
আরও পড়ুন: গুজরাট বাংলা শাসন করবে না, বাংলা শাসন করবে বাংলা: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
তবে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে নিরাপত্তার উপর। বিশেষত পশ্চিমবঙ্গের মত রাজ্যে যেহেতু ভোট ঘিরে হিংসার ঘটনার উদাহরণ রয়েছে, তাই সেখানে নিরাপত্তায় জোর দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ১২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হয়েছে। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে ৩০ কোম্পানির কাছাকাছি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছিল। ২০১৯ -এ লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পরও ৪০ কোম্পানি বাহিনী আসে। এবার প্রথম ভোট ঘোষণার আগেই এসে গিয়েছে ১২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। অন্যদিকে, একুশের নির্বাচনে বাহিনী পরিচালনায় তিন সদস্যের কমিটি তৈরি করেছে নির্বাচন কমিশন। ভারতের নির্বাচনী ইতিহাসে এই বিষয়টি প্রথম। কোথায় কোথায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে, তা জানতে রাজ্যগুলির কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। ওই কমিটি সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখবে। এরপর বিবেচনা করেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর অবস্থান ঠিক করবে কমিশন।