ওয়াশিংটন / নয়া দিল্লি: সুষমা স্বরাজ ‘কোনও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব’ ছিলেন না। তাঁর সাম্প্রতিকতম বইয়ে, এমনটাই দাবি করেছেন প্রাক্তন মার্কিন সেক্রেটারি অব স্টেট মাইক পম্পেও। বইটির নাম, ‘নেভার গিভ অ্যান ইঞ্চ: ফাইটিং ফর আমেরিকা আই লাভ’, বঙ্গানুবাদে ‘কখনও এক ইঞ্চি জমিও দিইনি: আমার ভালবাসার আমেরিকার জন্য লড়াই’। এই বইয়ে প্রয়াত ভারতীয় বিদেশমন্ত্রীর প্রতি ‘গুফবল’-এর মতো অপমানজনক শব্দও প্রয়োগ করেছেন মাইক পম্পেও। এর জন্য পম্পেও-র নিন্দা করেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সুষমা স্বরাজ সম্পর্কে পম্পেওর মন্তব্যগুলি ‘অসম্মানজনক’ বলেছেন জয়শঙ্কর। যদিও জয়শঙ্করকে তার বইয়ে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন পম্পেও।
প্রথম মোদী সরকারের বিদেশমন্ত্রী ছিলেন সুষমা স্বরাজ। অন্যদিকে, ট্রাম্প জমানায় ২০১৭ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সিআইএ-র ডিরেক্টর ছিলেন মাইক পম্পেও, আর তারপর ছিলেন ট্রাম্পের সেক্রেটারি অব স্টেট। বইয়ে তিনি দাবি করেছেন, ভারতের বিদেশ নীতি নির্ধারক দলের কোনও গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন না সুষমা স্বরাজ। তিনি লিখেছেন, “পরিবর্তে, আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে অনেক বেশি কাজ করেছি।”
তবে, এস জয়শঙ্করের সঙ্গে তাঁর সবথেকে বেশি তালমিল ঘটেছিল বলে জানিয়েছেন মাইক পম্পেও। সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর ছিলেন পম্পেওর সময়ের দ্বিতীয় ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী। পম্পেও জানিয়েছেন, জয়শঙ্করকে তিনি অত্যন্ত পছন্দ করেন। জয়শঙ্করের ভাষা জ্ঞানেরও প্রশংসা করেছেন তিনি। এস জয়শঙ্করের ইংরেজি ভাষা জ্ঞান তাঁর থেকেও ভালো বলে দাবি করেছেন। ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী সম্পর্কে তিনি বলেছেন, “পেশাদার, যুক্তিবাদী এবং তাঁর বস এবং তাঁর দেশের একজন রক্ষক।”
পম্পেও জানিয়েছেন, প্রথম সাক্ষাৎ থেকেই জয়শঙ্করের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছিল। জয়শঙ্করের কূটনৈতিক ভাষণে তিনি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। সুষমা স্বরাজের এই ক্ষেত্রে খামতি ছিল বলে দাবি করেছেন প্রাক্তন মার্কিন সেক্রেটারি অব স্টেট। এমনকি, জয়শঙ্করও বিষয়টি স্বীকার করেছিলেন বলে দাবি করেছেন তিনি। এরপরই সুষমা স্বরাজকে ‘গুফবল’ এবং ‘হার্টল্যান্ড পলিটিক্যাল হ্যাক’ বলে বর্ণনা করেছেন মাইক পম্পেও। মার্কিন কটুকথা গুফবলের অর্থ বোকা। আর পলিটিক্যাল হ্যাক বলতে বোঝায়, এমন ব্যক্তি যিনি কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের জন্য অনৈতিক কাজ করতেও পিছপা হন না।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর কাছে পম্পেও-র বইয়ের এই সকল দাবি নিয়ে মুখ খুলেছেনএস জয়শঙ্কর। বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, “আমি দেখেছি সেক্রেটারি পম্পেওর বইতে একটি অনুচ্ছেদে শ্রীমতি সুষমা স্বরাজকে উল্লেখ করা হয়েছে। আমি সর্বদা তাঁকে অত্যন্ত সম্মান করতাম এবং তাঁর সঙ্গে আমার অত্য়ন্ত ঘনিষ্ঠ এবং উষ্ণ সম্পর্ক ছিল। আমি তার প্রতি ব্যবহার করা অসম্মানজনক কথাগুলির নিন্দা জানাচ্ছি।”