নয়া দিল্লি: বাঙালি খাবার থেকে দক্ষিণ ভারতীয় খাবার, এমনকি চাইনিজ খাবার সহ বিভিন্ন ধরনের খাবারের পদ পাওয়া যায় সংসদ ভবনের ক্যান্টিনে। এবার এই ক্যান্টিনের নতুন সংযোজন হচ্ছে মিলেটের ডিশ। অর্থাৎ জোয়ার, বাজরা এবং রাগী দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার। যার মধ্যে জোয়ারের নিরামিষ উপমা থেকে রাগীর ধোসা এমনকি বাজরার টিক্কা থেকে বাজরার খিচুড়িও থাকবে। শুনতে কিছুটা অবাক লাগলেও সংসদ ভবন সূত্রে এমনটাই জানা যাচ্ছে। আর এই সমস্ত পদ মিলবে আজ, ৩১ জানুয়ারি অর্থাৎ বাজেট অধিবেশনের একেবারে শুরু থেকে।
জানা গিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম রবিবার মন কি বাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মিলেটের খাবারের গুরুত্বের কথা বলেন। ২০২৩ সালকে আন্তর্জাতিক মিলেট অর্থবর্ষ হিসেবেও ঘোষণা করা হয়েছে। তাই এবার সংসদ ভবনের ক্যান্টিনে মিলেটের খাবারের আয়োজন করা হল।
যদিও গতমাসে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমোর শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন সংসদ ভবনের ক্যান্টিনে মিলেট মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছিলেন। আর সেই মধ্যাহ্নভোজে অংশগ্রহণ করেছিলেন সমস্ত দলের সাংসদরা। এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার শীর্ষস্থানীয় সদস্যরাও সেই মিলেট মধ্যাহ্নভোজে অংশগ্রহণ করেন। ওই মিলেট মধ্যাহ্নভোজের আয়োজনে আপ্লুত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক টুইট বার্তায় লেখেন, ২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক মিলেট বর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতি হিসেবেই এই মধ্যাহ্নভোজের যোগ দিয়েছিলাম। এই উদ্যোগে সব রাজনৈতিক দলের সদস্যরা অংশগ্রহণ করায় তাঁদের ধন্যবাদও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। টুইটারে তিনি এ কথা উল্লেখ করে লিখেছিলেন, সব রাজনৈতিক দলের সদস্যদের মিলেট মধ্যাহ্নভোজে অংশগ্রহণ করতে দেখে ভালো লাগছে।
তবে এবার কেবল একদিন নয়, অন্যান্য পদের মত মিলেটের পদ সংসদ ভবনের ক্যান্টিনে সর্বদা পাওয়া যাবে বলে সূত্রের খবর। ফলে এবার থেকে সংসদ ভবনের ক্যান্টিনে স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তিরা মিলেটের খাদ্য অর্থাৎ ওটস-এর দুধ অথবা সোয় দুধ ছাড়াও রাজস্থানের খাবার বাজরার রাব এবং রাগী মটর কা সর্বা (স্যুপ), গুজরাটি খাবার বাজরা পিঁয়াজের মুঠিয়া, সাম্বারের সঙ্গে রাগি রাভা ইডলি, মধ্যপ্রদেশের খাবার শাহী বাজরে কি টিক্কি এবং গুজরাটের অত্যন্ত জনপ্রিয় প্রাতঃরাশ জোয়ার ও সবজির উপমা খেতে পারবেন। আর তার সঙ্গে থাকবে বাদামের চাটনি। এছাড়া রাজস্থানের রাজগিরা পুরি সঙ্গে আলুর সবজি এবং বাজরা অথবা রাগীর রুটি এবং গুজরাটের অত্যন্ত জনপ্রিয় বাজরার খিচুড়ি সংসদ ভবনের মধ্যাহ্নভোজের মেনুতে থাকবে। এমনকি মিলেটের স্যালড, মিলেট থেকে তৈরি কেশরী ক্ষীর এবং রাগীর লাড্ডুও পাওয়া যাবে। সংসদ ভবনের পাশাপাশি দেশের ঐতিহ্যবাহী খাদ্য মেলাতেও মিলেটের বিভিন্ন পদের আয়োজন করার উদ্যোগ নিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালকে আন্তর্জাতিক মিলেট বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ। মূলত ভারতের সুপারিশের পরিপেক্ষিতেই এই ঘোষণা করেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ। তাই এবার মিলেটের খাবারের গুরুত্ব যেমন একদিকে প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরছেন, তেমনই দেশের বিভিন্ন জায়গায় মিলেটের খাবার রাখার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। মিলেটের তৈরি খাবার যেমন সহজপাচ্য, তেমনই স্বাস্থ্যকর। এছাড়া এগুলি অতি সহজে রান্না করা যায়। তাই খাদ্য তালিকার একেবারে প্রথম সারিতে মিলেটকে তুলে আনতে তৎপর নরেন্দ্র মোদীর সরকার।