নয়া দিল্লি: চার বছরেরও বেশি সময় ধরে বেশ কিছু রাজ্যে হিন্দুদের সংখ্যালঘু ‘তকমা’ নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে (Supreme Court of India) মামলা হয়েছিল। দেশের বেশ কিছু রাজ্যে অন্যান্য সম্প্রদায়ের তুলনায় হিন্দুদের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণেই এই দাবি তোলা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের নজিরবিহীন টি এমএ পাই মামলার রায়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছিল যে রাজ্যস্তরে সংখ্যালঘুদের চিহ্নিত করতে হবে। হিন্দুদের সংখ্যালঘু তকমা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সোমবার দেশের সর্বোচ্চ আদালতের কাছ থেকে আরও বেশি সময় চেয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের ‘সূদূরপ্রসারী প্রভাব’ রয়েছে, সেই কারণে রাজ্য সরকার ও অন্যান্য সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনা করতে হবে, তারপরই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে বলেই জানা গিয়েছে। আইনজীবী অশ্বিনী কুমার উপাধ্যায়ের পেশ করা রিট পিটিশনের পরিপ্রক্ষিতে, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রক হলফনামা দাখিল করে দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে জানিয়েছে, “রিট পিটিশনের দাখিল হওয়ার পর থেকে বিষয়টি গোটা দেশে সূদূর প্রসারী প্রভাব ফেলেছে। সেই কারণে সকলের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, নইল দেশে অকারণ জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে।”
যদিও উপাধ্যায়ের বর্তমান পিটিশন ২০২০ সালে দাখিল করা হয়েছিল। ২০১৭ সালে প্রথমবারের জন্য তিনি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের কাছে হিন্দুদের সংখ্যালঘু তকমার আবেদন জানিয়েছিলেন। শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল একমাত্র কেন্দ্রই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং এই সংক্রান্ত দাবি সংখ্যালঘু কমিশনেই পাঠাতে হবে। সংখ্যালঘু বিষয়কের মন্ত্রকের সচিবের দায়ের করা ৩ পাতার হলফনামাতে বলা হয়েছে, ” সংখ্যালঘু তকমা দেওয়ার ক্ষমতা একমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারে হাত থাকলেও, রাজ্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনরা পরই এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে। কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয় নিয়ে ভবিষ্যতে জটিলতা এড়াতে এবং বিভিন্ন সমাজতাত্ত্বিক দিক পর্যালোচনা করা পর মাননীয় আদালতকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানাবে।”
এর আগে ২৫ মার্চ সুপ্রিম কোর্টে একটি হলফনামা দিয়েছিল কেন্দ্র। সেখানে তারা বলেছিল, রাজ্য সরকারগুলিরও কোনও সম্প্রদায়কে ‘সংখ্যালঘু’ ঘোষণা করার অধিকার রয়েছে। এমনকী তাদের তরফে উপাধ্যায়ের আবেদন খারিজেরও দাবি উঠেছিল। পিটিশনে উপাধ্যায়ের দাবি ছিল ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী লাক্ষাদ্বীপ, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, জম্মু ও কাশ্মীর এবং অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর এবং পঞ্জাবে হিন্দুরা সংখ্যালঘু। তাই তাদের সেই মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন ওই আইনজীবী।