চন্ডীগঢ়: ১২ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন দিল্লির বাসিন্দা এক হরিয়ানভি গায়িকা। অবশেষে সোমবার হরিয়ানার রোহতকের ভাইনি ভৈরোঁ গ্রামের কাছে, এক ফ্লাইওভারের পাশে মাটিতে খুঁড়ে তাঁর বিকৃত দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। মঙ্গলবার রোহতক পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত শুক্রবারই এই মামলায় জড়িত সন্দেহে হরিয়ানার মেহান থেকে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই দেহের সন্ধান পাওয়া যায়। ওই হরিয়ানভি গায়িকাকে অপহরণ করে হত্যা করার অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। পুলিশের দাবি, দোষ স্বীকারও করে নিয়েছে ওই দুই অভিযুক্ত।
জানা গিয়েছে, মৃতা গায়িকার বয়স ছিল ২৬ বছর। তিনি সাধারণত মিউজিক ভিডিয়ো তৈরি করে ইউটিউবে আপলোড করতেন। তাঁর পরিবারের দাবি, ১১ মে-র পর আর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি তাঁরা। এরপর থেকে ওই সঙ্গীতশিল্পীর ফোন সুইচ অফ করা ছিল। এর তিনদিন পর পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে কোনও সূত্রই পাচ্ছিল না। গত শনিবার বন্ধ থাকা ফোনটি হঠাতই চালু করা হয়। সেই ফোনের সিগনালের সূত্র ধরে, ওই দিন রবি নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খোঁজ মেলে অনিল নামে আরও এক ব্যক্তির।
ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ (দ্বারকা) শঙ্কর চৌধুরী জানিয়েছেন, ধৃতদের বিরুদ্ধে একটি অপহরণ, হত্যা ও প্রমাণ লোপাটের মামলা দায়ের করা হয়েছে। রীতিমতো ষড়যন্ত্র করে ওই সঙ্গীতশিল্পীকে খুন করেছিল তারা। অভিযুক্তদের একজন তাঁকে ফোন করে মিউজিক ভিডিয়ো তৈরি করার অজুহাতে দেখা করতে বলেছিল। তারপর কৌশলে তাঁকে মাদক খাইয়ে বেহুঁশ করে এবং হত্যা করে। এরপর, দেহটি নিয়ে গিয়ে রোহতক হাইওয়ের পাশে পুঁতে দিয়েছিল তারা।
কিন্তু, কেন তাঁকে হত্যা করা হল? পুলিশ জানিয়েছে, আসলে অভিযুক্ত রবি এবং অনিল দুজনেই ওই সঙ্গীত শিল্পীর পূর্ব-পরিচিত। তারা মেহামের একটি আর্থিক সংস্থার কর্মী। এর আগে রবির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ জানিয়েছিলেন ওই গায়িকা। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, তার বদলা নিতেই এই হত্যা।
সোমবার দেহটি উদ্ধারের পর, ওই সঙ্গীতশিল্পীর পরিবারকে খবর দেয় পুলিশ। ময়নাতদন্তের পর, দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সোমবার রাতেই পরিবারের সদস্যরা দ্বারকা থানার পাশে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, ওই গায়িকাকে হত্যার আগে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। তাদের সঙ্গে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিল ভিমসেনার সদস্য এবং স্থানীয় বাসিন্দারাও। তবে, পুলিশের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বলা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত ধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি।