আইজল: ইউটিউব চ্যানেল চালান লালমানগাইজুয়ালা ওরফে আঙ্গাইহা এবং তাঁর দাদা লালমিংহলুয়া ওরফে সেনা। মিজোরামের আইজলের বাসিন্দা এই দুই ভাইয়ের বয়স ২০-র কোঠায়। তাঁরা আইজলের বিভিন্ন নির্জন এলাকায় তাঁরা ভূত খুঁজে বেরান। সেই ভিডিয়ো ইউটিউবে আপলোড করেন, ফলোয়ারের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। এই শখের ভূত-গোয়েন্দাদের কারণেই এবার সমাধান হল এক হত্যা রহস্যের। ৩০ জুন রাতে আঙ্গাইহা এবং সেনা ক্যামেরা নিয়ে গিয়েছিলেন আইজলের উপকণ্ঠে দিহমুনজালের তলাং নদীর কাছে এক অন্ধকার জঙ্গলে। এই দুই ইউটিউবার ভাই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে লাইভ স্ট্রিমিং করছিলেন। আর ভূত খুঁজতে গিয়ে এক পচাগলা মৃতদেহের সন্ধান পান তাঁরা।
ঘটনাটা প্রায় সিনেমার মতো। ভূত খুঁজতে খুজতে অন্ধকারের মধ্যে ওই পচাগলা শরীরে হোঁচট খেয়েছিলেন বড় ভাই সেনা। ধুলো ছেড়ে উঠে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন তিনি এবং তাঁর ভাই। তিন বছর ধরে ইউটিউব চ্যানেলটি চালাচ্ছেন তাঁরা। কোনওদিন এই দৃশ্য দেখেননি। সেনা বলেছেন, “এর আগে আমরা অনেকবার অনেক ভয়ঙ্কর পরিবেশে খোঁজাখুঁজি করেছি। কখনই ভয় পাইনি। তাই বলে এক নিষ্প্রাণ শরীরে হোঁচট খাওয়া! আমি কোনওদিন ভাবতেই পারিনি।”
Ghost hunting brothers found dead body in a farmhouse during youtube live stream on 30th June @Mizoram, India. pic.twitter.com/rGlVOY7ImR
— Joel Lalrinchhana (@St_Ojoe) July 1, 2023
অবিলম্বে তাঁরা আইজল পুলিশকে খবর দিয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে ওই এলাকায় পুলিশের একটি দল পাঠানো হয়েছিল। ফরেনসিক তদন্তে দেখা যায়, ওই ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর মাথার পিছনে একটি গভীর আঘাত দেখা ছিল। কোনও ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতে সেটা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। ফলে তদন্তে নামে পুলিশ। জানা যায়, নিহত ব্যক্তির নাম ভ্যানলাল্লাউমা, বয়স ৫৫। দক্ষিণ মিজোরামের লুংলেই শহরের বাসিন্দা সে। বেশ কয়েকদিন ধরে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পুলিশি তদন্তে উঠে আসে, দুই সন্দেহভাজনের নাম – লালরোলিয়ানা এবং তাঁর স্ত্রী লালসিয়াম্পুই।
পুলিশি তদন্ত শুরুর পরই তারা দুজন পালিয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর, শনিবার (১ জুন), দুপুর ১টা নাগাদ তাদের দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরানর মুখে দুজনেই তাদের অপরাধ স্বীকার করেছে। এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, টাকা-পয়সা নয়ে তর্কাতর্কির মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে ভ্যানলাল্লাউমা একটি কাঠের তক্তা দিয়ে আঘাত করেছিল লালরোলিয়ানা। তাতেই তার মৃত্যু হয়। পরে, স্ত্রীয়ের সাহায্য নিয়ে সে দেহটি তলাং নদীর কাছের জঙ্গলে ফেলে এসেছিল।