চণ্ডিগড়: মোহালি হামলার তিনদিনের মধ্যেই ঘটনার তদন্তে বড় সাফল্য পেল পঞ্জাব পুলিশ। শুক্রবার, রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আরপিজি হামলায় জড়িত সন্দেহে মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ষষ্ঠ ষড়যন্ত্রকারী ইতিমধ্যেই এক অন্য মামলায় পুলিশি হেফাজতে রয়েছে। তবে, এই ঘটনার তদন্তে উঠে এসেছে এক অতি উদ্বেগজনক তথ্য। ডিজিপি ভিকে ভাওরা জানিয়েছেন, এই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন বাব্বর খালসা ইন্টারন্যাশনাল এবং পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর সংযোগের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, আইএসআই-এর নির্দেশেই বাব্বর খালসা ইন্টারন্যাশনাল এবং স্থানীয় গ্যাংস্টারদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছে।
পঞ্জাব পুলিশ জানিয়েছে, এই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিল লখবীর সিং লান্ডা। এই কুখ্যাত গ্যাংস্টার আদতে পঞ্জাবের তরণ তরণ জেলার বাসিন্দা হলেও, ২০১৭ সালে সে কানাডায় চলে গিয়েছিল। তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে পাকিস্তানি জঙ্গি হরবিন্দর সিং রিন্ডার। নিশান সিং এবং চাদত সিং নামে তরণ তরণের দুই বাসিন্দার সহায়তায় লখবীর সিং-ই আরপিজি হামলা চালিয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, লান্ডার দেওয়া ঠিকানা থেকে আরপিজিটি সংগ্রহ করেছিল নিশান সিং। আর তরন তরনের আরেক বাসিন্দার কাছ থেকে একে-৪৭ অ্যাসল্ট রাইফেল সংগ্রহ করেছিল চাদত সিং। এই হামলাকারীদের নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলেন জনৈক নিধাস সিং। গত ৭ মে তারিখে এই তিন হামলাকারী তরণ তরণ থেকে মোহালিতে এসেছিল। এর দুদিন বাদেই চালানো হয় হামলা।
তবে, এই হামলা আসলে কাউকে আঘাত করতে নয়, পুলিশকে বার্তা দিতেই চালানো হয়েছিল বলে মনে করছে পঞ্জাব পুলিশ। গত সোমবার রাতে যে সময় রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা সদর দফতরে হামলা চালানো হয়েছিল, সেই সময় অধিকাংশ অফিস থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। গত সোমবার রাত পৌনে আটটা নাগাদ মোহালির সেক্টর ৭৭-এ অবস্থিত পঞ্জাব পুলিশের গোয়েন্দা সদর দফতরে রকেট-প্রপেলড গ্রেনেড বা আরপিজি হামলা চালানো হয়েছিল। তবে, সৌভাগ্যবশতঃ বিস্ফোরকটি শেষ পর্যন্ত ফাটেনি।
তবে এই হামলা নিয়ে বিশেষ উদ্বিগ্ন ছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা এজেন্সিগুলি। গোয়েন্দা আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন, এর আগে জঙ্গিরা গ্রেনেড হামলা চালালেও, আরপিজি হামলা এই প্রথম। এই কারণেই, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো, রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং, মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স, বিএসএফ-এর গোয়েন্দা শাখা – প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা এজেন্সিই এই হামলার বিষয়ে বিশদে তথ্য সংগ্রহ করছে। বাব্বর খালসা ইন্টারন্যাশনালের মতো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে পাক গুপ্তচর সংস্থার যোগ, স্বাভাবিকভাবেই তাদের কপালের ভাঁজ আরও বাড়াবে। গত কয়েক মাস ধরেই পঞ্জাবে ফের খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দাপট বাড়ছে। গত ৯ মে তারিখেই পঞ্জাব বিধানসভার বাইরের দেওয়ালে খালিস্তানি পতাকা এবং গ্রাফিতি দেখা গিয়েছিল। সেই রাতেই ঘটেছিল এই হামলা।