নয়া দিল্লি : জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের মধ্যেই এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা। গুরুতর এই অভিযোগে চাঞ্চল্য বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। ভিসি হাউসের সামনে থেকে ছাত্রীকে টেনে নিয়ে গিয়ে অন্ধকারে চড়াও হয় এক যুবক। ভিসি হাউসের ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা আরও একবার প্রশ্নের মুখে।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাত ১২ টা ৪৫ মিনিটে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানিয়ে একটি ফোন আসে। বসন্ত কুঞ্জ উত্তর থানায় ফোন করে অভিযোগ জানানো হয়। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে ডিসিপি নিজেই ছুটে যান বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।বসন্ত কুঞ্জ থানার এসএইচও ও পুলিশ কর্মীরাও সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
জানা গিয়েছে, সোমবার রাত ১১ টা ৪৫ মিনিট নাগাদ জেএনইউতে পিএইচডি-র এই ছাত্রী ক্যাম্পাসের মধ্যেই ঘুরছিলেন। তিনি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব গেট রোডে হাঁটছিলেন, তখন ক্যাম্পাসের ভিতরে একটি বাইকে চেপে এক যুবক প্রবেশ করে। এরপরই ওই যুবক শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে বলে অভিযোগ।
ওই ছাত্রী চিৎকার করতে শুরু করলে ধরা পড়ার ভয়ে অভিযুক্ত যুবক মোটরসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। দিল্লি পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মহিলাদের শালীনতা ক্ষুণ্ণ করার মামলা দায়ের করেছে।
এই ঘটনায় অবিলম্বে অভিযুক্তের গ্রেফতারির দাবি জানানো হয়েছে ছাত্র সংসদের তরফ থেকে। এমন ঘটনা জেএনইউতে প্রথম নয়। বারবার একই অভিযোগ সামনে আসছে। হোলির দিন নগ্ন হয়ে জেএনইউ ক্যাম্পাসে কটূক্তি করার অভিযোগ ওঠে বেশ কয়েকজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। গত ১৭ ও ২৭ এপ্রিল তাপতি হোস্টেলে মহিলাদের হয়রানির ঘটনা ঘটে। এছাড়া জেএনইউ ক্যাম্পাসে ছাত্রীদের পিছনে মদ্যপ যুবকদের ধাওয়া করার অভিযোগও সামনে এসেছে। পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এই ঘটনায় জিএসকেস পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছে ছাত্র সংসদ। জেএনইউ ক্যাম্পাসে ১৯৯০ সালের শেষের দিকে এসএফআই নেতৃত্বাধীন ছাত্র সংসদ যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে জিএসকেস গড়ে তোলে। যে কোনও যৌন হয়রানির ক্ষেত্রেই ছাত্র-ছাত্রীরা এই সংগঠনের কাছে এসে অভিযোগ জানাতে পারতেন। এই কমিটিতে নির্বাচিত ছাত্র ও শিক্ষক প্রতিনিধি থাকতেন। জিএসকেস শুধুমাত্র পড়ুয়াদেরই নয়, শিক্ষক ও কর্মীদেরও যৌন হয়রানির বিষয়ে ব্যবস্থা নিত।
২০১৬ সালে নতুন উপাচার্য আসার পর জিএসকেস তুলে দেওয়ার প্রস্তাব আসে। এরপর ছাত্র প্রতিনিধিদের সম্মতি না নিয়েই জিএসকেসের বদলে আইসিসি আসে। আইসিসিতে মনোনীত সদস্যরা থাকেন, সেখানেই আপত্তি ছিল জেএনইউ ছাত্র সংসদের। কারণ, আইসিসিতে নির্বাচিত সদস্যের সংখ্যা মাত্র ১। গত এক-দেড় বছর ধরে সেই নির্বাচনও হয়নি। ফলে আইসিসিতে এখন ছাত্র প্রতিনিধিত্ব নেই।
আরও পড়ুন : Coal Scam: ‘ইডি কি এতই অযোগ্য…’, কয়লাকাণ্ডে হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা