চেন্নাই: স্বাধীনতার পরের কয়েক দশক, দেশের প্রতিটি মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য ভারতকে বিদেশের সাহায্যের উপর নির্ভর করতে হত। কিন্তু, সেই পরিস্থিতির বদল ঘটেছিল গত শতাব্দীর ছয় ও সাতের দশকে। ভারতে ধান ও গমের উৎপাদন ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছিল। আর সেই ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন প্রখ্যাত কৃষি বিজ্ঞানী এম.এস. স্বামীনাথন। পরিচিতি পেয়েছিলেন ভারতের সবুজ বিপ্লবের জনক হিসেবে। বৃহস্পতিবার সকাল ১১.২০ মিনিটে চেন্নাইয়ে নিজ বাসভবনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই বিজ্ঞানী। বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। প্ল্যান্ট জেনেটিক্সের ক্ষেত্রে তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজই ভারতের কৃষিক্ষেত্রে বিপ্লব এনেছিল। টেকসই কৃষি ব্যবস্থার মাধ্যমে খাদ্য সুরক্ষা বাস্তবায়িত হয়েছিল দেশে। এই সাফল্য তাঁকে এনে দিয়েছিল বিশ্বব্যাপী পরিচিতি। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতীয় কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের প্রধান পদে ছিলেন। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি গবেষণা এবং শিক্ষা দফতরের সচিবের দায়িত্বও সামলান।
Deeply saddened by the demise of Dr. MS Swaminathan Ji. At a very critical period in our nation’s history, his groundbreaking work in agriculture transformed the lives of millions and ensured food security for our nation. pic.twitter.com/BjLxHtAjC4
— Narendra Modi (@narendramodi) September 28, 2023
তাঁর প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোশ্যাল মিডিয়ায় এমএস সবামীনাথনের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের দুটি ছবি পোস্ট করে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, “আমাদের দেশের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কৃষিক্ষেত্রে তাঁর যুগান্তকারী কাজ কোটি কোটি মানুষের জীবন বদলে দিয়েছিল এবং আমাদের দেশে খাদ্য সুরক্ষা এনেছিল।”
সৌম্যা স্বামীনাথন, মধুরা স্বামীনাথন এবং নিত্যা স্বামীনাথন নামে তাঁর তিন মেয়ে রয়েছে। ডাঃ সৌম্যা স্বামীনাথন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী তথা ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল পদে ছিলেন। এমএস স্বামীনাথনের মৃত্যুর পর তিনি বলেছেন, “গত কয়েকদিন ধরে তাঁর শরীর ভাল ছিল না। আজ সকালে খুব শান্তিপূর্ণভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। শেষ পর্যন্ত, তিনি কৃষকদের কল্যাণে এবং সমাজের সবথেকে দরিদ্র অংশের উন্নতির চেষ্টা করে গিয়েছেন। যাঁরা আমাদের পাশে আছেন, পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আশা করি, আমাদের বাবা এবং আমাদের মা মীনা স্বামীনাথন আমাদের যে শিক্ষা দিয়েছেন, সেই উত্তরাধিকার আমরা তিন মেয়ে ধরে রাখতে পারব। কৃষি ক্ষেত্রে নারীরা অবহেলিত বলে, যে সামান্য কয়েকজন স্বীকার করেছিলেন, তাঁদের অন্যতম ছিলেন আমার বাবা। মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য অনেক উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। ষষ্ঠ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে তিনি প্রথমবার জাতীয় নীতিতে লিঙ্গ এবং পরিবেশের একটি অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। এই অবদান নিয়ে তিনি অত্যন্ত গর্বিত ছিলেন।”