নয়া দিল্লি: এককালে বাংলার রাজনীতিতে চাণক্যের সঙ্গে তুলনা করা হত মুকুল রায়কে (Mukul Roy)। কিন্তু এখন সক্রিয় রাজনীতির আঙিনা থেকে অনেকটাই দূরে তিনি। এ হেন মুকুল রায়ের হঠাৎ করেই কাউকে না জানিয়ে দিল্লি চলে যাওয়ায় বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। তাহলে কি আবার ফুলবদল করতে চলেছেন মুকুল? এমন জল্পনার মধ্যেই বুধবার বিকেলে রাজধানীতে সাংবাদিক বৈঠকে বসলেন তিনি। দাবি করলেন, তিনি এখনও বিজেপিতেই আছেন। তৃণমূল ভবনে তাঁকে দেখা গেলেও, তিনি ঘাসফুল শিবিরে যোগ দেননি। মুকুলের কথায়, ‘তৃণমূল ছাড়ার প্রশ্নই নেই। কারণ কোনওদিন যোগই দিইনি।’ তাই বিজেপিতে আবার নতুন করে যোগ দেওয়ার কোনও প্রশ্নও ওঠে না বলে দাবি রায়সাহেবের। বললেন, ‘রিজয়েন বলে তো কোনও কথা হয় না। আমি বিজেপিতে ছিলাম, বিজেপিতে আছি।’
মুকুলবাবুর দিল্লিযাত্রা নিয়ে এবং তাঁর দলবদলের যে জল্পনা নিয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে না শাসক বা বিরোধী কোনওপক্ষই। এই যেমন বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, মুকুল রায় বঙ্গ রাজনীতির ‘লস্ট কেস’। গত কয়েকমাসে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও যে মুকুল রায়কে নিয়ে কোনও খবর হয়নি, সেই কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মুকুলের গায়ে বিজেপি বিধায়কের তকমা ঠেঁসে দিয়েছেন। বিধানসভার অন্দরে খাতায় কলমে অবশ্য মুকুল বিজেপিরই। কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে বিজেপির টিকিটে জেতা বিধায়ক। কিন্তু এখন বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি বলছেন তিনি লস্ট কেস। আবার তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলে দিচ্ছেন, তিনি বিজেপির বিধায়ক। মমতার কথায়, ‘এটা একটা খুব ছোট্ট বিষয়। এড়িয়ে যাওয়াই ভাল।’
অর্থাৎ, তৃণমূল ও বিজেপি উভয় পক্ষ থেকেই একপ্রকার বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে মুকুলবাবুকে নিয়ে তারা বেশি চিন্তিত নয়। তাহলে কি এবার মুকুলবাবু ‘না ঘর কা না ঘাট কা’? প্রশ্ন করা হলে মুকুলের জবাব, ‘ঠিক হ্যায়। বাত সে বাত হোগা।’ রায়সাহেব বলছেন, ‘আমি কোনও ধোঁকা দিইনি বিজেপিকে। তখন আমার শরীর ভাল ছিল না। তাই কিছুটা ধীরে চলছিলাম। আমি তো বিজেপিতেই ছিলাম, বিজেপিতেই আছি। দল কিছু কাজ দিলে, কাজ করব।’