মুম্বই: আদতে মধ্য প্রদেশের ইন্দোরের বাসিন্দা। চিন, হংকং এবং পাকিস্তানে জঙ্গি প্রশিক্ষণ পেয়েছে সে। তারপর এই ‘বিপজ্জনক ব্যক্তি’ ইন্দোর থেকে প্রবেশ করেছে ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বই শহরে, জানিয়েছে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি। মুম্বই পুলিশ-সহ মহারাষ্ট্রের সমস্ত তদন্তকারী সংস্থাকে একটি ইমেল করে সতর্ক করেছে এনআইএ। সূত্রের খবর ওই ইমেলে এনআইএ জানিয়েছে, সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তির নাম সরফরাজ মেমন। এনআইএ-র পক্ষ থেকে তদন্তকারীদের মেমনের আধার কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং পাসপোর্টের প্রতিলিপিও পাঠানো হয়েছে। মেমনকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করতে একটি বিশেষ দল গঠন করেছে মুম্বই পুলিশ। সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগেই এক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি এনআইএ-কে মেমনের উপস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক করে একটি ইমেল পাঠিয়েছিল। ঠিক কী উদ্দেশ্যে সে মুম্বইয়ে এসেছে, তা এখনও অজানা।
মুম্বই পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, রবিবার বিকেলেই এনআইএ এই সতর্ক বার্তাটি ইমেল করেছে। এর পরই মহারাষ্ট্রের সমস্ত তদন্তকৈারী সংস্থাগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। সন্দেহভাজন সরফরাজ মেমন, মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা হওয়ায় সেই রাজ্যের পুলিশকেও সতর্ক করা হয়েছে। ইন্দোর পুলিশের কাছ থেকে ওই ব্যক্তি সম্পর্কে আরও তথ্য চেয়েছে মুম্বই পুলিশ। সূত্রের খবর, এনআইএ সাফ জানিয়েছে, মুম্বইয়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করতে পারে মেমন। কেন্দ্রীয় সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থাও মেমনের খোঁজে জায়গায় জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে। তারা জানিয়েছে, সরফরাজ মেমনের নামে ‘এনিমি অব দ্য স্টেট’ বা ‘রাষ্ট্রের শত্রু’ তকমা রয়েছে। গত কয়েক মাসে, একাধিকবার মুম্বই পুলিশের কাছে সম্ভাব্য সন্ত্রাসবাদী হামলার হুমকি এসেছে। তবে তদন্তে সবগুলিই ভুয়ো বলে প্রমাণিত হয়েছে। সরফরাজ মেমনের হুমকি কিন্তু একেবারেই হাল্কা ভাবে নেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের কর্তারা দুই যুবককে সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করেছে। তাদের একজন মহারাষ্ট্রের পশ্চিম থানের বাসিন্দা খালিদ মুবারক খান। অপরজন তামিল নাড়ুর বাসিন্দা আবদুল্লা। তারা দুজনেই জঙ্গি প্রশিক্ষণের জন্য পাকিস্তান যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল বলে জানা গিয়েছে। দুজনেরই বয়স ২০-র কোঠায়। দিল্লি পুলিশের দাবি, পাকিস্তান থেকে এক জঙ্গি হ্যান্ডলার তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত। অস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য তাদের পাকিস্তানে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সে। সেই মতো অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করার পরিকল্পনা করেছিল তারা। তাদের কাছ থেকে ২টি পিস্তল, ১০টি তাজা কার্তুজ, একটি ছুরি ও একটি তার কাটার যন্ত্র উদ্ধার করা হয়েছিল।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, “বিশেষ সেলের কাছে খবর ছিল যে, পাকিস্তান থেকে জঙ্গি হ্যান্ডলাররা, ভারতের কিছু নাগরিককে সোশ্যাল মিডিয়া উগ্রপন্থার ষশিক্ষা দিচ্ছে। ভারতে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য তাদের পাকিস্তানে গিয়ে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এরপরই ওই দুজন ধরা পড়ে।”