নয়া দিল্লি: গত সপ্তাহের সোম, মঙ্গল, বুধ, তারপর আবার আজ সোমবার – সব মিলিয়ে চার দিন ধরে ৪০ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে রাহুল গান্ধীকে জেরা করে ফেলল এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট। তারপরও, প্রশ্ন ফুরোলো না তদন্তকারীদের। জেরা গড়াল পঞ্চম দিনে। ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত তহবিল তছরুপের মামলায় ফের মঙ্গলবার নয়া দিল্লির ইডির সদর দফতরে হাজিরা দিতে হবে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে। সোমবার নয়া দিল্লির হাসপাতাল থেকে মুক্তি পেয়েছেন তাঁর মা সনিয়া গান্ধী। কংগ্রেস সভানেত্রীকেও একই মামলায় ইডি দফতরে হাজিরা দিতে হবে ২৩ জুন। অন্যদিকে, অগ্নিপথ নিয়ে বিরোধিতার পাশাপাশি রাহুল গান্ধীকে হেনস্থা করার অভিযোগ নিয়ে এদিনই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করেছেন কংগ্রেস শীর্ষ নেতাদের এক প্রতিনিধি দল।
রবিবার ছিল রাহুল গান্ধীর ৫২তম জন্মদিন। তার পরদিনই সোমবার (২০ জুন), চতুর্থ দিনের জন্য এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেটের জেরার সামনে হাজির হন রাহুল। সঙ্গে ছিল ‘জেড+’ ক্যাটেগরির সিআরপিএফ নিরাপত্তার সুরক্ষা। সকাল ১১.০৫ নাগাদ দিল্লির এপিজে আবদুল কালাম রোডে ইডি সদর দফতরে পৌঁছান কংগ্রেস নেতা। গত সপ্তাহে, যে যে দিন রাহুল ইডির দফতরে হাজিরা দিয়েছিলেন, সেই দিনগুলিতে রাজধানীর রাজপথ কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছিল। জায়গায় জায়গায় খণ্ডযুদ্ধ দেখা গিয়েছিল দিল্লি পুলিশ এবং কং নেতা-কর্মীদের মধ্যে। এদিন অবশ্য সেই ছবি দেখা যায়নি। বরং, কংগ্রেস নেতারা যন্তর মন্তরে সত্যাগ্রহ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ আন্দোলন জারি রাখেন।
তারপরও, গত সপ্তাহের মতোই এদিনও ইডি সদর দফতর সংলগ্ন এলাকায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সংস্থাটির কার্যালয়ের চারপাশে পুলিশকর্মী এবং আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যে ছয়লাপ ছিল। অন্যান্য দিবের মতো এদিনও বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ মধ্যাহ্নভোজের জন্য জেরায় বিরতি দেওয়া হয়। ইডি অফিস ছেড়ে যান প্রাক্তন কংগ্রেস প্রধান। বিকেল পৌনে পাঁচটা নাগাদ রাহুল আবার ফিরে আসেন ফের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হওয়ার জন্য। এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত রাহুলের জেরা চলছে।
অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতাদের একটি প্রতিনিধি দল এদিনই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করেছেন। প্রতিনিধি দলটিতে ছিলেন রাজ্যসভার বিরোধী নেতা মল্লিকার্জুন খর্গে, লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম, সাংসদ জয়রাম রমেশ এবং সাধারণ সম্পাদক কেসি বেনুগোপাল। রাহুল গান্ধীর জেরা এবং অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের আন্দোলনের সময় দিল্লি পুলিশ তাদের উপর যারপরনাই অত্যাচার করছে বলে রাষ্ট্রপতির কাছে অভিযোগ জানান তাঁরা। এই বিষয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে দুটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছে কংগ্রেস প্রতিনিধি দল। এই বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে তদন্ত করে বিষয়টি সংসদীয় বিশেষাধিকার কমিটিতে পাঠানোর আবেদন করেছে কংগ্রেস।