National Policy for Rare Diseases: এবার খুব সহজেই, কম খরচেই মিলবে বিরল রোগের ওষুধ! এগিয়ে এল সরকার
WHO বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রায় ৭ হাজার রোগকে বিরল রোগ বলে চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ রোগের ওষুধ আছে। সাধারণভাবে প্রতি হাজার মানুষের মধ্যে ১ জন যে রোগে আক্রান্ত হন, তাকে বিরল রোগ বলা হয়। আর কিছু ক্ষেত্রে এই রোগের ওষুধের দাম কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়।
দেশের সাধারণ মানুষের কষ্ট কিছুটা লাঘব করতে এবার এক নতুন প্রচেষ্টায় ভারত সরকার। যা বাস্তবায়িত হলে আমার বা আপনার মতো আমজনতার শরীর খারাপে আর্থিক চাপ কিছুটা হলেও লাঘব হতে পারে। রেয়ার ডিজিজ বা বিরল রোগের ওষুধ এবার সরকার নিজেই কিনে রাখবে। দরকার মতো তা রোগীদের দেওয়া হবে।
WHO বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রায় ৭ হাজার রোগকে বিরল রোগ বলে চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ রোগের ওষুধ আছে। সাধারণভাবে প্রতি হাজার মানুষের মধ্যে ১ জন যে রোগে আক্রান্ত হন, তাকে বিরল রোগ বলা হয়। যে কোনও বড় দেশে জনসংখ্যার ৬ থেকে ৮ শতাংশ মানুষ এইসব রোগের শিকার হয়ে থাকেন। ভারতে এই বিরল রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাটা প্রায় ১০ কোটি। একেই অধিকাংশ বিরল রোগের চিকিত্সা নেই। আর তা ছাড়া যেসব রোগের ওষুধ আছে, সেই সব ওষুধের দাম সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। বাড়ি-গাড়ি থেকে ঘটি-বাটি সব বিক্রি করে দিলেও হয়তো সেই ওষুধের দাম জোগাড় হবে না। এসব ক্ষেত্রে উপায় একটাই ক্রাউডফান্ডিং। লোকে সাহায্য করলে ভাল, না হলে মৃত্যুর অপেক্ষা।
২০২১ সালে কেন্দ্রীয় সরকার National Policy for Rare Diseases-এর কথা ঘোষণা করে। সেখানে রোগীকে এককালীন ২০ লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়। পরে, তা বাড়িয়ে ৫০ লাখ করা হয়। কিন্তু এই বিরল রোগের ওষুধ রোগীর পরিবারকেই বাইরে থেকে কিনতে হতো। তবে সেই ওষুধের দামের কাছে এই পরিমাণ টাকাও অনেকক্ষেত্রেই কম পড়ে যায়। উদাহরণও স্বরূপ বলা যায়, স্পাইনাল মাসকিউলার অ্যাট্রপি বা জিনের সমস্যার কারণে যে রোগে মেরুদণ্ড তার শক্তি হারায়। দুনিয়ায় একমাত্র নোভার্টিস এই রোগের ওষুধ তৈরি করে। কমপ্লিট কোর্সের খরচ ১৭ কোটি টাকা। গতবছর দিল্লি হাইকোর্টে এইসব নিয়ে একাধিক মামলাও হয়। সেখানে বলা হয়, আদালত সরকারকে নির্দেশ দিক যাতে সরকার যেন ওষুধ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কথা বলে কম দামে বিরল রোগের ওষুধের ব্যবস্থা করে। Indian Council of Medical research-এর ডিরেক্টরকে মাথায় রেখে আদালত একটা কমিটি তৈরি করে দেয়। সেই কমিটির রিপোর্টই এবার হাইকোর্টে জমা পড়তে চলেছে। সেই রিপোর্টে ঠিক হয়েছে বিরল রোগের ওষুধের জন্য বছরে ৯০০ কোটি টাকার একটা সরকারি ফান্ড থাকবে। এই টাকায় সরকার নিজেই বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে ওষুধ কিনবে এবং তা রোগীদের দেওয়া হবে। কিছু বিরল রোগের ওষুধ যাতে ভারতেই তৈরি করা যায়, সেজন্য গবেষণার কাজেও এই ফান্ড থেকে টাকা দেওয়া হবে। আপাতত ১৩টি বিরল রোগকে চিহ্নিত করেছে বিশেষজ্ঞ কমিটি। যার মধ্যে রয়েছে Gaucher Disease, Duchenne Muscular Dystrophy, Cystic Fibrosis, Spinal Muscular Atrophy-র মতো নানা জিনঘটিত অসুখ। এসব রোগের ওষুধ একসঙ্গে অনেক কিনলে তা কম দামে পেতে AstraZeneca, Novartis, Roche, Sarepta, Sanofi-র মতো বিদেশি ওষুধ কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করবে সরকার।
তবে যে সরকারের ঘরে ওষুধ পৌঁছনোর পর তা রোগীর কাছে কীভাবে পৌঁছবে? এই সংক্রান্ত মোডালিটিজ তৈরির কাজই শুধু বাকি। সেটা হয়ে গেলেই আদালতে রিপোর্ট জমা পড়বে। আদালত সম্মতি দিলে গর্ভমেন্ট পলিসি তৈরি হয়ে যাবে। আর তারপরই আশা করা যায় বিষয়টা বাস্তবায়িত হয়ে যাবে। তখন বিরল রোগের ওষুধ পাওয়া সাধারণ মানুষের জন্য অনেকটা সুবিধাজনক হয়ে যাবে।